শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
গাজীপুরে দারুল আরকাম সরকারি মাদ্রাসার ৩ দিনব্যাপী রিফ্রেসার্স প্রশিক্ষণ  সম্পন্ন তাহিরপুরে সাংবাদিক কে প্রাণনাশের হুমকি” প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত সিরাজগঞ্জ তাড়াশে কাপড়ে মোড়ানো এক নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার গাজীপুরে মাদকদ্রব্যর অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস পালন দক্ষিণ সাতলা-রাজাপুর ৪ কি.মি. ইটের সোলিং রাস্তার বেহাল দশা নকলায় ‘মাদক’কে না বলুন কর্মসূচি বাস্তবায়ন বরিশালে নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শকদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় গাজীপুরে দারুর রহমান ইসলামিয়া মাদ্রাসায় কোরআন সবক প্রদান ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত টঙ্গীতে পরিবেশ নদী বায়ু দূষণ ডেঙ্গু মশার উৎপাতে জনসচেতনতার দাবিতে মানববন্ধন গাজীপুরে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত

তালা উপজেলা দেশের দুধ রাজ্য | সময়ের দেশ

বোরহান উদ্দিন, তালা (সাতক্ষীরা) উপজেলা প্রতিনিধি :
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৮ আগস্ট, ২০২১
  • ২২৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দুগ্ধ উৎপাদন অঞ্চল সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জেয়ালা গ্রাম। ইতিমধ্যে দেশকে ছাপিয়ে বহির্বিশ্বে দুগ্ধ রাজ্য হিসাবে প্রকাশ পেয়েছেন দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের এই গ্রাম।

২০১৯ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরা এস এম মোস্তফা কামাল জেয়ালা গ্রামে দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষয়ে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে
গ্রাম হবে শহরথ প্রকল্পের আওতায় তালা উপজেলার জেয়ালা গ্রামকে সাতক্ষীরা জেলার প্রথম গ্রাম হিসেবে শহরে রূপান্তর করার ঘোষণা দিয়েছেন।তালা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে এই উপজেলা ছোট-বড় ৪০ টির রেজিঃ কৃত গাভীর খামার আছে। বর্তমান সময়ে আরো বেশি করে খামার গড়ে উঠেছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে প্রতিদিন ছয় থেকে আট হাজার এর বেশি লিটার দুধ উৎপাদন হয় এই পল্লীতে।এসব দুধ রপ্তানি হয় খুলনা,ঢাকা বরিশাল, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে। যা প্রভাব ফেলেছে সাতক্ষীরার অর্থনীতিতে। বৃদ্ধি পেয়েছেন জেলার অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির হার।এত সফলতার কারনে উপজেলার যুবকরা এখন ঝুঁকছে গাভী পালনে,গড়ে তুলছেন ছোট বড় খামার।তালা উপজেলার জেয়ালা গ্রাম একটি মিশ্রিত সাম্প্রদায়িক জন গুষ্টির মিলিত বসবাস । জেয়ালা গ্রামের ঘোষ পাড়া ঘুরে দেখা যায়,এমন কোন বাড়ি নেই যে সেখানে ৮-১০ গাভী গরু নেই। এই গ্রামে শুধু মাত্র ঘোষ সম্প্রদায়ের সংখা ১০০ পরিবার তাদের মধ্যে ৬০টি মতো বড় খামার আছে।আর সেখানে ১৫ হাজারের মতো গাভি রয়েছেন। জেয়ালা গ্রাম সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা একটি সরকারি খাল থাকায় দু পাশের্ব বিভক্ত রয়েছে। অপর প্রান্তে চন্ডীপুর ঘোষ সম্প্রদায়ের পরিবারের সংখ্যা ৫০ টির । যার মধ্যে ছোট বড় বিশ টার মতো খামারে প্রায় এক হাজার গাভী আছেন। গ্রামের অপর দিকে মুসলিম আর ঘোষ মশয় দের সাথে প্রতিযোগিতা করে গড়ে উঠেছে বড়,বড় গাভী খামার। আর সেখানে উৎপাদন হচ্ছে দুগ্ধ। মুসলিমদের প্রায় ৩০-৪০ টি খামারে ৫-৬ শত গাভী দেখা গেছে।

এই এলাকায় দিন দিন খামার বৃদ্ধির কারনেই উপজেলা সদর সহ জেয়ালা গ্রামের আসে পাশে গড়ে উঠেছে দুগ্ধ সংশোধনী কেন্দ্র। পাখিডাকা ভোরেই জেগে হাজার ব্যাস্ততায় শুরু হয় দাদা বৌদির কাজ। নারী-পুরুষ ছোটেন খামারের দিকে। শুরু করেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। গোবর সরিয়ে রাখেন নির্দিষ্ট স্থানে। মোটর (পাইপের) পানি দিয়ে গা ধোয়ানো হয় গাভী গুলো। খেতে দেওয়া হয় ঘাস-বিচালি কিংবা ভুসি, খইল সহ নানা পুষ্টিকর গো খাদ্য। দুধ দুইয়ে রাখা হয় ছোট-বড় সিলভারের কলসি কিংবা প্লাস্টিকের পাত্রে বা প্রাচীন তম টিনের হাঁড়ি কলসিতে। তার পর এসব দুধভর্তি পাত্র নিয়ে সাইকেলে পুরুষরা ছোটেন তা বিক্রি করতে চলে আসে দুধ সংশোধনীগারে।

জেয়ালা গ্রামের বার বার জাতীয়, উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ে অসংখ্যবার পুরষ্কার প্রাপ্ত দিবস চন্দ্র ঘোষ জানান, ১৯৯৪ সালে সে গরু বিক্রি করে ১টি বিদেশী গরু ক্রয় করেন। বর্তমানে তার খামারে ৫৫-৬০টি বিদেশী গাভী (গরু) আছে। নিজেই দুগ্ধ দহন করেন। গাভী পালনের জন্য কাজের লোক থাকলেও, গাভীর দুধ দহনে তিনি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। নিজের কাজ নিয়ে করতে ভালোবাসেন, এখনও তিনি সকালে ও বিকালে ২৫হতে ৩০টি গাভীর দুধ দহন করেন। প্রতিটি গাভী হতে ১০ হতে ২০ কেজি পর্যন্ত দুধ পাওয়া যায় বলে তিনি জানান।

একাধিক খামারি বলেন করোনা সংক্রমণ এর কারনে লকডাউন থাকায় তারা দুধ বিক্রি করতে নানা প্রতিবন্ধকতায় পড়েছেন।এছাড়া এবছর গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সরবরাহ ধারাবাহিকভাবে পারছেন না। সরকারী ভাবে সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তারা জানান। খামারীরা আরো বলেন আমাদের এলাকায় দিন দিন বাড়ছে খামার। সাথে সাথে পরিবেশন ভারসাম্য বজায় রাখতে স্থানীয় সরকার সহ সরকার কে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
পরিবেশ ভারসাম্য বজায় রাখার সহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তালা সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও তালা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক এসএম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে জানান, তিনি ইউপি চেয়ারম্যান থাকা কালীন জেয়ালা গ্রাম কে স্থানীয় সরকার প্রধান হিসেবে সকল সহযোগিতা প্রদান করেছেন। তিনি আরো জানান গাভী পালনের ফলে প্রচুর পরিমাণে বর্জ্য, মল, মূত্র জমাট বেঁধে পরিবেশ দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়। তিনি চেয়ারম্যান থাকা কালীন কয়েক কিলোমিটার খাল কেটে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার শালতা নদীর সাথে মিলিয়ে দিয়েছেন তার ফলে এলাকার সকল বর্জ্য নিমিষেই নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। তিনি আরো বলেন আগামীতে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত হলে এই গ্রামের খামার গুলো উন্নতবিশ্বের পদ্ধতি ব্যবহারের ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য আধুনিকায়ন করবেন বলে তিনি জানান।তিনি আরো জানান আমি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় এই গ্রাম বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে থাকতো। ২০০১১ সাল থেকে ২০০১৬ সাল পর্যন্ত আমি দেশের এই বৃহত্তম দুধ উৎপাদন কেন্দ্রের ও তালা উপজেলা জলাবদ্ধতা নিরসনে লক্ষ্যে ডুমুরিয়া – তালা সিমান্তের বাঁধ কেটে, স্থায়ী সমাধান করেছেন।

তালা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, এই উপজেলা দুধে সমৃদ্ধ। তালা উপজেলায় চাহিদার চেয়ে বেশি দুধ উৎপাদন হওয়াই এসব দুধ রপ্তানি হয় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে। প্রাণ, ডেইরি মিল্ক, আড়ং, মিল্ক ভিটা এসব দুধ খামারিদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে দুগ্ধ জাতীয় পণ্য প্রস্তুত করে। তিনি আরও বলেন,তালা উপজেলায় প্রায় ৩৭৫৫ টি গাভী খামার আছে। উপজেলা বিভিন্ন খামারে নানা প্রজাতির প্রায় লক্ষাধিক গাভী আছেন বলে তিনি জানান।
খামারিদের প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সহায়তা প্রদানের কথা বলেন। এছাড়া তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গাভী পালনে সহযোগিতা পরামর্শ দেওয়া হয়।এছাড়াও সরকারিভাবে খামারিরা আর্থিকসহ আনুসঙ্গিক সহযোগিতাও পাচ্ছে। তার কাছে সর্বশেষ তথ্য মতে গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এবং গো খাদ্যের দামের তুলনায় দুধের দাম অনেক কম বলে তিনি জানান।

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের নামাজের সময়সুচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:০৪ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:০৮ অপরাহ্ণ
  • ১৬:৪৩ অপরাহ্ণ
  • ১৮:৪৯ অপরাহ্ণ
  • ২০:১১ অপরাহ্ণ
  • ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ
©2020 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102