পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) স্থানীয় অফিসের উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির পরিদর্শক ও হিসাব সহকারী পদে নিয়োগে অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দুটি পদে মোট ৩ জনের কাছ হতে প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকা উৎকোচ গ্রহন সহ স্বজনপ্রীতি করার তথ্য পাওয়া গিয়েছে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার সন্দীপ কুমারের ও নিয়োগ কমিটির বিরুদ্ধে।
সুত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) আওতাধীন স্থানীয় অফিসের উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লি: কর্মচারীদের মডেল চাকুরী প্রবিধান মালা/২০১৮ এর আলোকে ২ জন পরিদর্শক ও ১জন হিসাব সহকারী পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়। যার স্মারক নাম্বার-৪৭.৬২.৮৭৯০.১০০.১১.০৪.২১-৪০১ তারিখ: ০৬-০৫-২১ পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তী প্রকাশের পরে পরিদর্শক হিসেবে ২১ জন যাচাই বাছাই করে ১৮ জন টিকে যান এবং হিসাব সহকারী পদে ৮ জনে মধ্য যাচাই বাছাই করে ৬ জন টিকে যায়। নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে ২ টি পদের ৩ জন নিয়োগের বিপরীতে দুই জনের নাম শোনা যায় যে তারা টাকা দিয়ে দেন দরবার করেছেন। এমন অভিযোগের কথা শুনে সংবাদকর্মীরা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার সন্দীপ কুমারের কাছে জিগাসা করলে তিনি অস্বীকার করেন।
২৮ ই আগস্ট(শনিবার) ওই দুটি পদের বিপরীতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা ও ভাইভার পরে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার সন্দীপ ও উপজেলা বিআরডিবির চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ শুরু করেন লুকোচুরি। দীর্ঘক্ষণ লুকোচুরির অংশ হিসেবে টাকা-পয়সার দেন দরবার করতে কয়েক দফা বৈঠক করতে উপজেলা চেয়ারম্যানের অফিস কক্ষ ব্যবহার করা হয়। সর্বশেষ দেনদরবার শেষে সংবাদকর্মীদের পূর্ব ঘোষিত নামের মধ্য পরিদর্শক পদে সম্রাট চক্রবর্ত্তীর নাম এবং উপজেলার সরকারী একজন কর্মকর্তার আত্নীয় সজল আইচ এর নাম ঘোষনা করা হয় যার বিপরীতি প্রায় ২০ লক্ষধিক টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। অপরদিকে হিসাব সহকারী পদে সন্তু ভদ্র কে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ প্রদানের তথ্য পাওয়া যায়।
উক্ত পরীক্ষা ও ভাইভাবোর্ডে দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তারা হলেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরার উপ পরিচালক মো: আব্দুল আলিম, তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম তারেক সুলতান,উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, উপজেলা বিআরডিবির চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার সন্দীপ কুমার মন্ডল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পরীক্ষার্থীরা বলেন, এখানে পরীক্ষা কেবল নামমাত্র বা লোক দেখানোর জন্য পরীক্ষা ও ভাইভা নেওয়া হচ্ছে। সিলেকশন আগেই করেছেন কর্মকর্তা সন্দীপ মন্ডল ও চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ। এবং তাদের সাথে যোগসাজেশ করেছেন জেলা কর্মকর্তা আব্দুল আলিম। এখানে মোটা অংকের টাকা লেদদেন হয়েছে।
প্রকাশ, এই উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সন্দীপ মন্ডল গত বছর উপপরিদর্শক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তী প্রকাশ করেন। সেখানে এমন দূর্ণীতি ও ঘুষের মাধ্যমে নিয়োগ হচ্ছে বলে মর্মে জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে দেন।
উল্লেখ্য যে, পূর্ব ঘোষিত নাম ও নিয়োগ অনিয়ম,দূর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অর্থ উৎকোচ গ্রহণের পায়তারা করার অভিযোগে সিনিয়র সাংবাদিক ও সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা ফেসবুক ওয়ালে পোষ্ট প্রদান করেন।
নিয়োগে স্বজনপ্রীতি,দূনীর্তি ও অর্থ উৎকোচের বিষয়ে জেলা উপ পরিচালক মো: আব্দুল আলিম ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সন্দীপ মন্ডলের সাথে বারংবার মোবাইল ফোন যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তা সম্ভব হয়নি।
স্বজনপ্রীতি ও অভিযোগের বিষয় চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ বলেন, টাকা লেনদেনের বিষয় আমি কিছু জানি না। বরং নিয়োগ নিয়ে আমার সংশয় মনে হওয়ায় নিয়োগ বোর্ড আমি থাকতে চাইছিলাম না। তখন বাকি চারজন আমাকে বাদ দিয়ে নিয়োগ সম্পন্ন করতে চাইলে অগত্যা আমাকে থাকতে হয়েছে।