শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে উল্টো মিথ্যা মামলা আতঙ্কে স্কুলছাত্রী ধর্ষিতার পরিবার। ধর্ষকের বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর ভুক্তভোগী পরিবার । শুক্রবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে ঝিনাইগাতী উপজেলার পূর্ব ধানশাইল গ্রামে ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে ধর্ষিতা পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাজমুল হোসেন রিপন। তিনি বলেন , ঝিনাইগাতী উপজেলার পূর্ব ধানশাইল গ্রামের দিনমজুর কন্যা ও স্থানীয় বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীপড়ুয়া এক স্কুলছাত্রী (১৩)কে পার্শ্ববর্তী শ্রীবরদী উপজেলার চক কাউরিয়া গ্রামের প্রভাবশালী ফরহাদ আলীর ছেলে মাহামুদুল হাসান (২১) নানা প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের ফাদে ফেলে। অতপর গত ২৬ ফেব্রুয়ারী বুধবার সন্ধ্যায় ধানশাইল গ্রামের একটি কলার বাগানে নিয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এসময় ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর ডাক চিৎকারে আসপাশের লোকজন এসে ধর্ষক মাহামুদুল হাসানকে আটক করে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ধর্ষক মাহমুদুল হাসানের পরিবারের লোকজন ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর সাথে বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে ধর্ষনের ঘটনাটি মিমাংশা করাতে রাজি হন। কিন্তু স্কুলছাত্রী নাবালিকা হওয়া স্থানীয় নিকাহ রেজিস্ট্রার বিবাহ পড়াতে অসম্মতি ঞ্জাপন করেন। একপর্যায়ে উভয় পরিবারের সম্মতি ক্রমে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি শেরপুরের একটি নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে মাহমুদুল ও স্কুলছাত্রীর বিবাহ দেয়া হয়। এরপর মাহমুদুল হাসানকে নিয়ে ওই স্কুলছাত্রী আসে তার বাবার বাড়িতে। এতিকে মাহামুদুল হাসানের পরিবারের পক্ষ থেকে মাহামুদুল হাসানকে আকটে রাখা হয়েছে মর্মে দাবি করে আদালতে ১০০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত মামলায় বিচারক মাহামুদুল হাসানকে উদ্ধারের বিষয়ে ওয়ারেন্ট ইস্যু করে। উক্ত নির্দেশ বলে থানা পুলিশ মাহামুদুল হাসানকে উদ্ধার করে আদালতে সোপর্দ্দ করে। আদালত থেকে ছাড়া পেয়ে মাহামুদুল হাসান তার পরিবারের সাথেই রয়েছে। বর্তমানে তার পরিবার ওই স্কুলছাত্রীকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করে আসছেন। পাশাপাশি ওই ধর্ষিতা স্কুলছাত্রী ও তার বাবা মাকে আসামী করে আদালতে একটি প্রতারনা মামলা দায়ের করে। বর্তমানে মামলাট তদন্তধীন রয়েছে। অপরদিকে ধর্ষিতার পিতা বাদি হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে গত ২০ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মাহমুদুল হাসানসহ অজ্ঞাতনামা আরো একজনকে আসামি করে একটি দায়ের করেন। মামলার আইনজীবী এএইচএম নূরে আলম হীরা জানান, নাবালিকা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর বিয়ের নামে প্রতারনা শুধুমাত্র। এফিডেভিট করা হয়েছে, যা কোনভাবেই আইনসিদ্ধ নয়। ওই ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নালিশী মামলা দায়েরের পর ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান ঘটনাটির তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কে নির্দেশ দিয়েছেন এ ব্যাপারে জামালপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এমএম সালাহউদ্দীন বলেন, ওই ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে। দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।