শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ষাটউর্ধ ঘর। কমলা কোচ উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা হালচাটি গ্রামের মৃত চর্চারাম কোচের স্ত্রী। সহায় সম্বল বলতে কিছুই নেই কমলা রানী কোচের। গত প্রায় ২৫ বছর পুর্বে দিনমজুর স্বামী চর্চারাম কোচের মৃত্যু হয়। স্বামী চর্চারাম কোচ মৃত্যুবরনের পর শুরু হয় কমলা রানী কোচের দুঃখ দুর্দশা। ২ শিশু ছেলেসহ তার জীবিকার তাগিদে কমলা রানী কোচ বেছে নেন দিনমজুরির কাজ।
স্বামীর ভিটে মাটি না থাকায় অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে দিনমজুড়ি করে তার দুই ছেলেকে লালন পালন করে বড় করেছেন কমলা রানী কোচ । ২ ছেলে বিবাহ করে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে আলাদা। তাদের সংসারের বুঝা বহন করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। বয়সের ভারে ন্যুইয়ে পরেছেন কমলা রানীর কোচ। হাটা চলাও করতে পারেন না তিনি।ফলে অতিকষ্টে অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছেন তিনি। ছোট ছেলে মঙ্গল কোচ মাঝেমধ্যে কিছু খাবার দেয়। তবে বেশির ভাগ সময় প্রতিবেশিরাই তাকে দেখেন বলে জানান কমলা রানী কোচ। থাকার বসতঘর না থাকায় গ্রামবাসীরা মিলে ৪ ফর্দ ঢেউ টিন দিয়ে বনের জমিতে একটি চালা ঘর বেঁধে দেন তাকে। সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা গেছে, ঘরটি বসবাসের অনুপযোগী। বৃষ্টি এলে ঘরের একপাশ থেকে অন্যপাশে পানি গড়ে পরে। মাটিতে শুয়ে ঘুমাতে হয় তাকে। ঘরে নেই থাকার কোন বিছানা। খঁড় বিছিয়ে একটি ছিড়া কাঁথা মুড়িয়ে বসবাস করেন তিনি। গ্রামবাসীরা জানান,গত ২ বছর পুর্বে বিধবা ভাতার কার্ড হয়েছে তার নামে। ৩ মাস পরপর ১৫ শ টাকা ভাতা পান তিনি। তবে ওই টাকায় তার চিকিৎসার ব্যয়ভার মেটানো ও সম্ভব হয় না। জীবিকা নির্বাহ করবেন কি দিয়ে? । কমলা রানী কোচ ও গ্রামবাসীরা জানান,গত ১০ বছরে একটি সরকারি ঘর চেয়ে কাংশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের কাছে বহুবার আবেদন নিবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোন কাজে আসেনি। কমলা রানী কোচ আক্ষেপের সুরে বলেন মারা যাওয়ার পুর্বে তার ভাগ্যে একটি সরকারি ঘর জুটবে কি? এব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। কাংশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আতাউর রহমান বলেন, তিনি সবেমাত্র দ্বায়িত্ব গ্রহন করেছি। বরাদ্দ পাওয়া গেলে কমলা রানী কোচের ঘরের বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফারুক আল মাসুদ বলেন, বিষয়টি আমি অবহিত হয়েছি। যেহেতু তার জমি নেই সেহেতো বিবেচনায় এনে সামনে বরাদ্দ পাওয়া গেলে তাকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।