শেরপুরের শ্রীরবদী উপজেলার গড়জরিপা আজিজিয়া দাখিল মাদ্রাসায় জালিয়াতির মাধ্যমে আয়া নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে । নিয়োগ প্রাপ্ত আয়া আছমা খাতুনের বেতন স্থগিতের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিস নির্দেশ দিলেও, তা মানছেন না সুপার মো. আব্দুল কাদির। জানা যায়, গত ৩১শে জুলাই ২০২০ ইং তারিখে গড়জরিপা আজিজিয়া দাখিল মাদ্রাসায় আয়া পদে নিয়োগের জন্য পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় । ওই পরীক্ষায় ৭ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেন। কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষার নিয়মনীতি উপেক্ষা করে জাল- জালিয়াতের মাধ্যমে আছমা খাতুনকে নিয়োগ দেয় মাদ্রাসার সুপার মো. আব্দুল কাদির ও গর্ভনিং বডির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। এ বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহনকারী প্রার্থী আরজিনা বেগম উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেন। এতেও কোন কাজ না হলে পরে মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও সুপার রুহুল আমিন তালুকদারসহ ৫ জনকে আসামী করে শেরপুরের সহকারি জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন বলেন, আছমা খাতুনের বিল বেতন বন্ধের নির্দেশ দেন। কিন্তু মাদ্রাসা সুপার আব্দুল কাদির আছমা খাতুনের বিলবেতন বন্ধ করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগে প্রকাশ, আছমা খাতুনের ২ টি ঠিকানায়, ২ টি এনআইডি রয়েছে। একটি এনআইডি শেরপুর সদরের ও আরেকটি এনআইডি শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপার ঠিকানায়। দুটি এনআইডিরই জন্ম তারিখ ১/১/১৯৮৮ইং তারিখ। গড়জরিপার এনআইডিতে শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ আছে ৫ম শ্রেনী পাশ। অথচ তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ৮ম শ্রেনী পাশের সনদ দিয়ে । এছাড়া আছমা খাতুনের বিবাহ হয় ২০/৩/১৯৯২ সালে। এ সময় বিবাহের কাবিন নামায় তার বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ১৮ বছর । অপরদিকে আছমা খাতুনের ছেলে আনিছুর রহমানের এসএসসি পাস সনদে জন্ম তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১/৩/১৯৯৭ সাল। এখানে প্রশ্ন জাগে আছমা খাতুনের বিবাহের বয়স,চাকুরিতে দেয়া বয়সে কোন মিল নেই। এ ব্যাপারে নিয়োগ বঞ্চিত প্রার্থী আরজিনা বেগম বলেন,”আমি শেরপুর মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেছি। পেটের দায়ে ও কর্মসংস্থানের অভাবে বাধ্য হয়ে আয়া পদে চাকুরির জন্য আবেদন করেছিলাম। সুপার ও সভাপতিকে কিছু খরচও দিতে চেয়েছিলাম। তাদের চাহিত ২০ লাখ টাকা। তা দিতে না পারায় আমাকে নিয়োগ না দিয়ে যোদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা কামারুজ্জানের বাসার কাজের মেয়ে আছমা খাতুনকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জালিয়াতি করে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যে ক’জন প্রার্থী অংশগ্রহন করেছিল, তাদের মধ্যে আমিই অধিক যোগ্যতা সম্পন্ন। আমিই এ নিয়োগের দাবীদার। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনাসহ ন্যয় বিচার দাবি করেন তিনি। অত্র মাদ্রাসার সুপার মো. আব্দুল কাদির বলেন, “বিধিমোতাবেক আছমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগের সময় তার কাবিন নামার বয়স, ছেলের বয়স দেখার কোন নিয়ম নেই। তিনি বলেন, কমিটির চাপে আছমার বেতন ছাড় দেয়া হয়েছে। তবে আদালতের মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার বিল আর ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান তিনি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন তালুকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন আছমা খাতুনের বিল বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু মাদ্রাসা সুপার মোঃ আব্দুল কাদির কিভাবে বিল দিচ্ছেন, বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান ।