শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
গাজীপুরে দারুল আরকাম সরকারি মাদ্রাসার ৩ দিনব্যাপী রিফ্রেসার্স প্রশিক্ষণ  সম্পন্ন তাহিরপুরে সাংবাদিক কে প্রাণনাশের হুমকি” প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত সিরাজগঞ্জ তাড়াশে কাপড়ে মোড়ানো এক নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার গাজীপুরে মাদকদ্রব্যর অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস পালন দক্ষিণ সাতলা-রাজাপুর ৪ কি.মি. ইটের সোলিং রাস্তার বেহাল দশা নকলায় ‘মাদক’কে না বলুন কর্মসূচি বাস্তবায়ন বরিশালে নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শকদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় গাজীপুরে দারুর রহমান ইসলামিয়া মাদ্রাসায় কোরআন সবক প্রদান ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত টঙ্গীতে পরিবেশ নদী বায়ু দূষণ ডেঙ্গু মশার উৎপাতে জনসচেতনতার দাবিতে মানববন্ধন গাজীপুরে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত

মা মাটি ও মানুষের নেতা মানবিক মানুষ শহিদ মোঃ ময়েজউদ্দিন স্মরণে | সময়ের দেশ

মোহাম্মদ কানিছুর রহমান
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ৪৮৩ বার পড়া হয়েছে

আঞ্চলিক ভাষা যার কাছে প্রাণের খোরাক যোগাতো। হৃদয়ের গহিনে যে ভালবাসার জন্ম আজন্মকাল যে ভাষা, মা-মাতৃভূমিকে ধারণ করেছেন, লালন করেছেন সেই মানুষটির নাম শহিদ মোঃ ময়েজউদ্দিন। গাঁয়ের মাটির শোধা গন্ধ শরীরে মেখে যে মানুষটি সারা জীবন পথ চলেছেন। যে মানুষটিকে চাকচিক্য ভরা ইটপাথরের শহর বেধে রাখতে পারেনি প্রতিনিয়ত ছুটে গেছেন আপন ভুমে আপন মানুষের কাছে। জীবনের এক করুন পরিনতি বরণ করতে হবে জিবনেও কল্পনা করেননি। বুকভরা ভালবাসা আর হৃদয়ে মানুষকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর সহচর হয়ে তাঁর মত মহত হৃদয়ের মানুষের সাহচর্যে থেকে নিজের প্রান্তকে বিস্তৃত করেছে অসিমের প্রাণে। তাইতো তৎকালীন ঢাকা জেলা আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক হয়েও তিনি প্রতিনিয়ত ছুটে যেতেন তার নিজ মহকুমার কালিগঞ্জ। ঢাকা জেলার কালিগঞ্জ মহকুমার নওয়াপারা গ্রামে জন্ম ১৭ মার্চ ১৯৩০ সালে। যে জনপদে যে জনমানুষের মাঝে বিচরন, যে আলোবাতসে, যে মেঠোপথ পুকুরপাড় খেলারমাঠ এ দুরন্ত ছুটে চলা। ঠিক সে চলার পথকে কণ্টকাকীর্ণ করে জীবন প্রদিপ নিবিয়ে দিল কিছু দুষ্কৃতিকারী পাষণ্ড। ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৮৪ সালের সকালের আলো বিচ্ছুরিত হচ্ছিল জানান দিচ্ছিল একটি নতুন দিনের। আগামীর প্রত্যাশায় যখন মানুষ সংগঠিত হচ্ছিল স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ঠিক তক্ষুনি প্রকাশ্য দিবালোকে ছুরিকাঘাত করে নিবিয়ে দিল একপ্রাণ। আলোর ছটা নিমেষে অন্ধকারে পরিনত হল। আমরা হারিয়ে ফেললাম জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্থ সহচর বহু আন্দোলন সংগ্রামের পথিকৃৎ। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক, প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য, জাতীয় সংসদের সদস্য একজন মানবিক মানুষ মোঃময়েজউদ্দিন।

২৭ সেপ্টেম্বর মো. ময়েজউদ্দিনের ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮৪ সালের এইদিনে ঢাকার অদূরে কালিগঞ্জে হরতাল চলাকালীন এক মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় নিহত হোন তিনি। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য হরতাল ডাকা হয়েছিল।

শহীদ মো. ময়েজউদ্দিনের বর্বোরোচিত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সারাদেশে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে স্ফূলিঙ্গের মতন। তাঁর আত্মদানের মধ্যে দিয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পরে সারাদেশে। শহিদ মোঃ ময়েজউদ্দিন এর মর্মান্তিক মৃত্যতে স্বৈরাচার পতনকে তরান্বিত করে। তৎকালীন ঢাকা জেলা বর্তমান গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার বীরসন্তান চিরনিদ্রায় শায়িত আছে ঢাকার বনানী কবরস্থানে।

মো. ময়েজউদ্দিন দেশমাতৃকার জন্য জীবনদানের গৌরবময় উজ্জ্বলতায় মৃত্যু পরবর্তী সময় থেকে তিনি ‘শহীদ ময়েজউদ্দিন’ নামেই সমধিক পরিচিত। ১৩ বছর বয়সে তার পিতা মৃত্যু বরণ করেন। গ্রামের স্কুলে পড়াশুনা করেও তিনি কৃতিত্বের সহিদ বৃত্তি পান। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে অর্নাস ডিগ্রি অর্জন করেন, এরপর আইন বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে আইন পেশাকে জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন । এই পেশায় বেশ সাফল্য অর্জন করেন ।

শহীদ ময়েজউদ্দিন অত্যন্ত সাধারণ জীবন-যাপন করতেন। তাঁর মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে তাঁর স্ত্রী মিসেস বিলকিস ময়েজউদ্দিন বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও তাঁদের পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলেকে তাদের বাবার আদর্শে মানুষ করেন। সকল ছেলে মেয়েকে উচ্চ শিক্ষিত, আদর্শ মানুষ ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রতিষ্ঠিত করেন।
বাবার রাজনৈতিক আদর্শে ও সমাজিক দায়বদ্ধতা থেকে শহীদ ময়েজউদ্দিনের দ্বিতীয় মেয়ে মেহের আফরোজ চুমকি, বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর কেন্দ্রীয় কমিটির মহিলা ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক, জাতীয় সংসদ সদস্য এবং সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী।
যে গ্রামে তিনি জন্মেছিলেন- সেই গ্রামের আপামর জনসাধারণের সাথে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিবিড় যোগাযোগ ছিল। গ্রামের মানুষের জন্য বিভিন্নমুখি উন্নয়নমূলক কার্যক্রমও গ্রহণ করেছিলেন। গড়ে তুলেছিলেন নওয়াপাড়া ‘হেলথ কমপ্লেক্স’। হাসপাতাল করার জন্য নিজে দুই বিঘা জমিও দান করেন। নিজের গ্রামের মানুষের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সবসময়ে নিজের সাধ্যমত ভূমিকা রেখেছেন। তার কাছ থেকে বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে উপকৃত হয়েছেন।

স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার গঠনের পর বিভিন্ন পর্যায়ে দল ও সরকারকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য একজন সংসদ সদস্য হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট ষড়যন্ত্রকারীরা জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সদস্য-স্বজন ও অন্যান্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে। এরকম রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শহীদ মো. ময়েজদ্দিন সংসদ সদস্যদের এক সমাবেশে বিশ্বাসঘাতক মোশতাক আহমেদের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছিলেন। কী সাহস আর নৈতিক শক্তিতে তিনি বলিয়ান ছিলেন, তা হয়ত এসময়ে অনুভব করা অনেকের পক্ষে সম্ভব নয়। আজ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনম্র চিত্তে শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। তাঁর অকাল মর্মান্তিক মৃত্যু শুধু একজন মানুষকে আমরা হারায়নি হারিয়েছি একজন পথপ্রদর্শক রাজনৈতিক নেতা এবং মহত হৃদয়ের মানবিক মানষকে। বাংলাদেশ যতদিন রবে বাংলার মানুষ যতদিন রবে বুকভরা ব্যথা নিয়ে তাঁকে স্মরণ করবে চিরকাল।

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের নামাজের সময়সুচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:০৪ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:০৮ অপরাহ্ণ
  • ১৬:৪৩ অপরাহ্ণ
  • ১৮:৪৯ অপরাহ্ণ
  • ২০:১১ অপরাহ্ণ
  • ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ
©2020 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102