ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দুই নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর। এহেন ঘৃণ্য কাজের বিচার দাবীতে মিছিল ও সমাবেশ করেছে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা।
শুক্রবার (১০ই জুন) বাদ জুম্মা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের নেতৃৃত্বে পৃথকভাবে আয়োজিত এই কর্মসূচীতে দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তররের তৌহিদী জনতা অংশগ্রহণ করেন।
শুক্রবার জুমআ’র নামাজের পর সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (বাংলা হাইস্কুল) মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সৈয়দপুর উপজেলা শাখা এবং রেলওয়ে পুলিশ ক্লাবের সামনে (জিআরপি মোড়ে) আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত নীলফামারী সাংগঠনিক জেলা ও সৈয়দপুর উপজেলা শাখা আয়োজন করে।
পরে এই দুই স্থান থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহরের প্রাণ কেন্দ্র বঙ্গবন্ধু চত্বরে (পাঁচ মাথা মোড়) এবং সৈয়দপুর রেলওয়ে মাঠে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে হাজার হাজার মুসল্লি, ইমামসহ সাধারণ মুসলমানরা সমবেত হয়।
বঙ্গবন্ধু চত্বরের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী যুব আন্দোলন সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সহ সভাপতি মুফতি মাসউদ রফিকী, ইসলামী আন্দোলন সৈয়দপুর উপজেলা সভাপতি মাওলানা সদর উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক হাফেজ নুরুল হুদা, সৈয়দপুর জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুফতি মুতাসিম বিল্লাহ, সৈয়দপুর পৌরসভার ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এরশাদ হোসেন পাপ্পু প্রমুখ।
আর রেলওয়ে মাঠের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মাওলানা মিসবাহী, মাওলানা মইনুল ইসলাম আল কাদেরী, মাওলানা রিজওয়ান আল কাদেরী, মাওলানা খুরশিদ আলম, মাওলানা নাসিম মাজহারী, মাওলানা ইমরান হাবিব, উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিটলার চৌধুরী ভুলু, সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক তারিক আজিজ প্রমুখ।
মিছিলে ‘বিশ্বনবীর অপমান, সইবে নারে মুসলমান, ‘ইসলামের শত্রুরা, হুঁশিয়ার সাবধান, ইত্যাদি স্লোগান দেন সর্বস্তরের তৌহিদী মুসলিম জনতা। এসময় লোকজন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি প্রধান নরেন্দ্র মোদী, নেত্রী নুপুর শর্মা ও মিডিয়া প্রধান নাভিন কুমার জিন্দালের ছবিতে জুতো মারাসহ কুশপুত্তলিকায় আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ জানান।
সমাবেশে আগত বক্তারা বলেন, রাসুল (সা.) কে নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন বিজেপির দুই নেতা। এর প্রতিবাদে মুসলমানরা আজ জেগে উঠেছে সারা দুনিয়ায়। বিশ্বনবীকে নিয়ে কটূক্তি কোনোভাবে বরদাশত করা হবে না। সরকারের প্রতি আহ্বান থাকবে সরকারও এর প্রতিবাদ জানাবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারতীয় একটি টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও তার স্ত্রী আয়েশা (রা.) সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্য দেয় বিজেপি’র নেত্রী নূপুর শর্মা। পরে একই বিষয়ে টুইটারে পোস্ট দেন বিজেপি’র দিল্লী শাখার মিডিয়া প্রধান নাভিন কুমার জিন্দাল।
এ নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপির দুই নেতা কর্তৃক মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর অবমাননা স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছে না বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষ। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে তীব্র সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেকে মহানবী (সা.) এর প্রতি ভালবাসা ও শ্রদ্ধা জানিয়ে বিভিন্ন পোস্টও দিচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।