বসতবাড়ির জমি লিখে না দেওয়ায় ৮০ বছর বয়সী মাকে মারধর করে দুই হাত ভেঙে দিয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তা ছেলে ও তার স্ত্রী। নির্যাতনের শিকার নারীকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার হাত, পা ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলে রাজীব আলী ডনকে বৃহস্পতিবার (৫ মে) গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
রাজীব আলী ডন ন্যাশনাল ব্যাংক নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর শাখার সিনিয়র কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। তার স্ত্রী খালেদা বেগম গৃহিণী।
নির্যাতনের শিকার মায়ের ছোট মেয়ে জনতা ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র কর্মকর্তা মোছা. সামসি জাহান বকুল বলেন, এর আগেও মাকে মারধর করেছে ভাই। এবারে মারধর করে হাত-পা ভেঙে দিয়ে নিজেই মায়ের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে গিয়েছিল। এ সময় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। আমি এই ঘটনায় একটি মামলা করেছি। আমি চাই, যাতে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।’
আরেক মেয়ে আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘আমার বাবা শিক্ষক, মাও শিক্ষক ছিলেন। ভাইবোন সবাই শিক্ষিত। বাবা-মা আমাদের শিক্ষিত করেছেন। সেই পরিবারে মাকে মারধর করা হয়েছে, এটি মেনে নেওয়ার মতো না। আমরা চাই, তার এমন শাস্তি হোক যাতে করে আর কোনও ছেলে তার মাকে মারধর না করে।’
অপারেশন থিয়েটারের সামনে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রেজিয়া বেগম বলেন, ‘বার বার ছেলেকে বলছিলাম, বাবা আমি তোমার মা, আমাকে মারিস না। আমি বংশের সবচেয়ে বড় সন্তান। তোর বাবা কিংবা আমার বাবা ও পরিবারের কোনও লোকজন আমার গায়ে কখনও হাত তোলেনি। কিন্তু আমার ছেলে কোনও কথা না শুনেই আমাকে মারধর করে। ছেলের নির্যাতনে আমি হাসপাতালে। আর যে ছেলেকে আদর-যত্ন করে মানুষ করেছি সেই ছেলে জেলে। আমি দেশের প্রচলিত আইনে এই ঘটনায় ছেলের বিচার চাই। যাতে কোনও মা ছেলের দ্বারা নির্যাতনের শিকার না হয়।