গাজীপুরের শ্রীপুরে ছয় রঙের বিদেশি টিউলিপ ফুলে সেজেছে দেলোয়ার হোসেনের বাগান। এ বছর প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে বিদেশি টিউলিপ ফুল বিক্রি শুরু করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সংশ্লিষ্টদের কাছে টিউলিপ ফুলের বাল্ব বিক্রি করেছেন তিনি। দেলোয়ারের এই টিউলিপ ফুলের বাগান দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসেন দর্শনার্থীরা।
উপজেলার কেওয়া পূর্বখণ্ড গ্রামে দেলোয়ার হোসেনের টিউলিপ বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাগানজুড়ে ফুটেছে সাদা, লাল, হলুদ, কমলা, গোলাপি বেগুনিসহ ছয় রঙের রাজসিক সৌন্দর্যের এই টিউলিপ ফুল। সারি সারি বেষ্টনী শেডে সাজানো ফুলগুলো দেখতে চমৎকার লাগছে। বাগানে ঢুকতেই ফুলের সৌন্দর্য মুগ্ধ করবে যে কাউকেই।
দেলোয়ার হোসেন জানান, শীত প্রধান দেশে ফুলটি হরহামেশাই দেখা যায়। কিন্তু গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশে এর দেখা পাওয়া প্রায় অসম্ভব। এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তিনি। বাগানের চারপাশে ঘন জাল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে টিউলিপ বাগান। এই ফুল ফোটাতে দেলোয়ার উচ্চ কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন বলে জানান। ফুলগুলো একটি শেডের নিচে চাষ হচ্ছে। আর চারপাশ ঢাকা ছোট ছিদ্রযুক্ত নেট দিয়ে। পুরো শেডটিতে বিশেষ পদ্ধতিতে তাপ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণ করা হয় সূর্যের আলো।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এ বছর প্রথমবারের মতো টিউলিপ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেছি। এ বছর ১২টি জাতের ছয় রঙের টিউলিপ ফুল বাগানে ফুটেছে। পঞ্চগড় জেলায় ১ লাখ টিউলিপ ফুলের বাল্ব বিক্রি করেছি। এ ছাড়াও চট্টগ্রাম ডিসি অফিসে ৬ হাজার, রাজশাহী জেলার এক সেনা কর্মকর্তার কাছে ৬ হাজার বাল্ব বিক্রি করেছি।’
দেলোয়ার হোসেন বলেন আরও বলেন, ‘প্রথমবারের মতো বাজারে ফুল বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতিটি স্টিক ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও টপসহ ৩ ফুল বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা। ইতিমধ্যে বাগানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেছেন। গত ৯ ও ১০ জানুয়ারি বাগানে টিউলিপ বাল্ব রোপণ করি। এ ছাড়াও এ বছর বেশ কিছু জেলায় ছোট পরিসরে প্রথমবারের মতো টিউলিপ ফুল চাষ হয়েছে।’
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে টিউলিপ ফুল চাষের আশা জাগছে। নেদারল্যান্ডসে এই ফুল রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। এ দেশে টিউলিপ চাষ করতে যা যা প্রয়োজন, সব ধরনের সহযোগিতা করবে কৃষি বিভাগ।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে গরম আবহাওয়া। তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত সবকিছু মিলিয়ে এ ফুল চাষ বাংলাদেশে যথেষ্ট কষ্টসাধ্য। এত প্রতিকূলতার পরও বাংলাদেশের একজন কৃষকের আন্তরিক চেষ্টায় টিউলিপ ফুল ফুটিয়েছেন।’