রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জাতীয় সংগ্রাম কমিটি রোহিঙ্গাদের সহজ শর্তে অসুলভ মূল্যে মোবাইল সিম প্রদানের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে।
আজ ১৪ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জাতীয় সংগ্রাম কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খানের সভাপতিত্বে সংগঠনের সাধারন সম্পাদক ও উখিয়ার পালংখাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী স্বাগত বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধন ও সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক ডিআইজি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মহাসচিব আবদুল্লাহ আল মামুন, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান আজম ,জাতীয় ভোক্তা আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম সবুজ, জননেতা এম মোস্তাক আহমেদ ভাসানী, কক্সবাজার লবন চাষী সমিতির সভাপতি এ্যড. মোঃ শাহাবু্িদ্দন, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক এম এইচ আরমান চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক ছিদ্দিক আহমদ আতিক, মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব আফতাব নূর, নারীনেত্রী জান্নাতুন নাহার বিথি প্রমুখ।
সমাবেশে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জাতীয় সংগ্রাম কমিটি সভাপতি মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, টেলি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মানবতার আড়ালে ব্যবসায়ীদের সুবিধা করে দেওয়ার যে পায়তারা তা সকলেই বুঝি। কোনভাবেই রোহিঙ্গাদের বৈধভাবে ৫টি সিম প্রদান করা যাবে না। এই রোহিঙ্গারা অবৈধ নেটওয়ার্ক সিম ব্যবহার করে মাদক, অর্থ পাচার, চোরা চালান এবং অসামাজিক কার্যে লিপ্ত হয়ে হাজারের মতো এইডস রোগী আজ শুধু কক্সবাজার সহ সারা দেশের জন্য আতংক তৈরি করেছে ।
তিনি আরো বলেন, আমরা অমানবিক এ কথা বলা যাবে না,রোহিঙ্গাদের আত্মীয়-স্বজনের সাথে যোগাযোগ রক্ষার্থে সাবেক ডাক ও টেলিযোগ মন্ত্রী যেভাবে টেলিফোন বুথ তৈরি করে সেখানে গিয়ে কথা বলার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন বিনামূল্যে সেটি কেন বন্ধ হল? সকল সিম উদ্ধার করে সঠিক মালিকদের কাছে সেই সিম বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি জানান।
সংগঠনের সাধারন সম্পাদক ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমরা কক্সবাজারে নাগরিকরা আজ মহা বিপদে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবিক দিক বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী যে মানবতা দেখিয়েছেন, তা যে আমাদের জন্য এত বড় কাল হয়ে দাঁড়াবে তা বুঝতে পারিনি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধপ্রবণতা দিন দিন বাড়ছেই। খুন, ধর্ষণ, মাদক, শিশু পাচার, ডাকাতি, অপহরণ, পতিতাবৃত্তিসহ সব ভয়ংকর অপরাধে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে তারা ।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে স্বাভাবিকভাবেই সন্ত্রাসবাদের উত্থান হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বলেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবত শরণার্থী হিসেবে আশ্রিত মায়ানমানের রোহিঙ্গা নাগরিকরা বাংলাদেশের নেটওয়ার্ক ব্যবহারের পাশাপাশি মায়ানমারের এমটিএমসির টেলিকম নেটওয়ার্ক ও ব্যবহার করে আসছে যা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ এবং অসাংবিধানিক।মায়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকরা আমাদের দেশের নাগরিকদের নামে ব্যবহৃত সিম অবৈধভাবে ব্যবহারের পাশাপাশি তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ব্যবসা পরিচালনা করছে। টেলিকম সেবা ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা মায়ানমারে চলে গেছে।
সুষ্ঠু সমাধানে তিনি বলেন, সবার আগে অবৈধ নেটওয়ার্ক বন্ধ ও সকল অবৈধ সিম জব্দ করা। দ্বিতীয়ত রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্ষণ সংগ্রাম কমিটির সাথে বসে স্থানীয় প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের প্রেক্ষিতেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
অন্যান্য বক্তারা বলেন,সকলের হাতে হাতে বাংলাদেশী মোবাইল সীম, লক্ষাধীক রোহিঙ্গা এনআইডি ও পাসপোর্ট এর আধিকারী। আজ এক ভয়াবহ অশনি সংকেত রোহিঙ্গারা আমাদের শ্রমবাজারে ঢুকে পড়েছে। তারা বীরদর্পে মুক্তাকাশে বাংলাদেশের নাগরিকদের মতোই ঘুরে বেড়াচ্ছে। স্থানীয়দের বসতভিটায় যাতায়তের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ঠি অবাধে কাটছে পাহাড় উজাড় হচ্ছে বন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের এই কঠিন সময়ে আজ বিপন্ন পরিবেশ, মহা সক্কটে অপার সম্ভবনাময় পর্যটন শিল্প, এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থায় ধ্বস নেমেছে। অবাধে মরণঘাতী নিত্যনতুন মাদকের কারনে যুব সমাজ ধ্বংসের মুখে।
মানববন্ধনে রোহিঙ্গাদের হাতে মোবাইল ও সিম প্রদান আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জাতীয় সংগ্রাম কমিটি ।