নাহিদ তার বাড়িতে উচ্চ শব্দে গান শুনছিলেন। তাদের প্রতিবেশী মুকুল আলীর (৪৫) মেয়ে অন্তসত্বা হওয়ায় মুকুল আলী নাহিদকে উচ্চ শব্দে গান বাজাতে নিষেধ করেন। নাহিদ তাৎক্ষণিক বক্সের শব্দ কমিয়ে দিলেও মুকুল আলী সেখান থেকে চলে আসলে আবারও শব্দ বাড়িয়ে দেন। মুকুল আলী পুনরায় নাহিদের বাড়িতে গিয়ে উচ্চ শব্দে গান বাজাতে নিষেধ করলে নাহিদ, তার বাবা বকুল আলী, মা ও তার বোন মিলে মুকুলকে গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে নাহিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা লোহার রড দিয়ে মুকুলের মাথায় আঘাত করে। এছাড়া চাকু দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে গুরুতর জখম করেন। মুকুলের চিৎকার শুনে তার ছোট ছেলে শাহীন আলম ও জামাই আলমগীর সেখানে গেলে তাদেরকেও মারধর ও চাকু দিয়ে আঘাত করে জখম করে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা মুকুলকে উদ্ধারে এগিয়ে গেলে আসামীরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত মুকুলকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় নিহত ভিকটিমের ছেলে মোঃ শামীম ইসলাম বাদী হয়ে রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানায় ০৮ জন নামীয় এবং ৩/৪ জন’কে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি রুজু হওয়ার পর উক্ত মামলার এজাহারনামীয় ৪,৫,৬,৭ এবং ০৮নং আসামীদেরকে রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। কিন্ত উক্ত মামলার ০১, ০২ এবং ০৩ নং আসামী গ্রেফতার এড়াতে রাজশাহী হতে পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোয়েন্দা নজরদারীর মাধ্যমে জানতে পারে যে, উল্লেখিত হত্যা কান্ডের এজাহারনামীয় ০১, ০২ এবং ০৩ নং আসামী নাহিদ, বকুল আলী এবং মোছাঃ আমেনা চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন মাদাম বিবিরহাট এবং উত্তর সলিমপুর এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৩ আগস্ট ২০২২ইং তারিখ আনুমানিক ১৭০০ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ নাহিদ হোসেন মোঃ বকুল আলী এবং মোছাঃ আমেনাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীরা উল্লেখিত হত্যা মামলার মূল পরিকল্পনাকারী এবং এজাহার নামীয় প্রধান আসামী বলে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।