মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল আযহা আজ ১০ জুলাই রবিবার । এদিন বাংলাদেশসহ আশপাশের দেশে ঈদ উদযাপিত হবে। যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে সারাদেশে মুসলিম সম্প্রদায় ঈদ-উল আজহা উদযাপন হচ্ছে। মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদ-উল আজহার জামাত শেষে ধর্মপ্রাণ সামর্থ্যবান মুসলমানরা সামর্থ্য অনুয়ায়ী পশু কোরবানি করবেন।
আল্লাহর জন্য নিজের জান-মাল ও প্রিয়তম জিনিস সন্তুষ্টচিত্তে বিলিয়ে দেওয়ার মহান শিক্ষা নিয়ে প্রতি বছর ঈদ উল আজহা ফিরে আসে মুসলমানদের মাঝে।
পবিত্র ঈদ উল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা দেশবাসীকে জানিয়েছেন ঈদের শুভেচ্ছা। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো ঈদ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে। ঈদের দিন সরকারিভাবে হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা ও শিশু সদনে উন্নত ও বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।
এদিকে, করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উল আজহার জামাত করতে বলেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুসারে জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ঈদ উল আজহা পালিত হয়। ঈদ উল আজহা আমাদের দেশের মানুষের কাছে কোরবানির ঈদ নামেই পরিচিত।
ইসলাম ধর্মমতে, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য হজরত ইবরাহিম (আ.) তাঁর ছেলে হজরত ইসমাইলকে (আ.) কোরবানি করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু আল্লাহর কৃপায় হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়। সেই ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পশু কোরবানি করে থাকে। উদ্দেশ্য আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করা। ঈদের পর ২ দিন পর্যন্ত (১১ ও ১২ জিলহজ) পশু কোরবানি করার বিধান রয়েছে। কোরবানি দেওয়া আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য ওয়াজিব। সাধারণত উট, দুম্বা, গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া এসব পশুই কোরবানি করার বিধান রয়েছে। তবে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে সব লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, ক্রোধ, স্বার্থপরতা তথা ভেতরের পশুত্বকে ত্যাগের মধ্য দিয়ে আত্মশুদ্ধি লাভের ভেতরেই রয়েছে কোরবানির প্রকৃত তাৎপর্য।
এই ঈদে পশু কোরবানিই প্রধান ইবাদত। ঈদের জামাত আদায় করে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়বেন কোরবানির জন্য। ঈদের জামাতে ব্যক্তি, সমাজ, দেশ, মুসলিম উম্মাহ এবং সারাবিশ্বের শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা হবে।
এদিকে, এবার ঈদ যেন বিষাদে রূপ না নেয়- সে বিষয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের অভিমত, অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। করোনা সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।