কৃষ্ণচূড়ার সদ্য ফোটা ফুলের পাশে বসে কোকিলের কুহুতান যেন একুশেরই আহ্বান। এই একুশে জাতীয় জীবনে অবিনশ্বর এক মহা-উদযাপনে পরিণত হয়েছে বছরের পর বছর।
ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-দল-মত নির্বিশেষে উদযাপন করার মতো এমন কালজয়ী দিন সত্যিই দ্বিতীয়টি নেই।আমাদের বাংলা বর্ণমালা বড়ই দুঃখিনী। কত কণ্টকাকীর্ণ পথ পেরিয়ে বাংলা বর্ণমালা আজ
বিশ্বদরবারে সমাদৃত, স্বীকৃত। একসময়ে বাংলা ছিল অস্পৃশ্য। সংস্কৃত কিংবা উর্দু-ফার্সির কাছে বাংলা ছিল তুচ্ছ ও তাচ্ছিল্যের। ব্রিটিশ বিতাড়নের পর এলো পাকিস্তান। কিন্তু শোষিত বাঙালির
বঞ্চনার ইতিহাস আরও দীর্ঘ হল। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পাবে না! উর্দুই হবে রাষ্ট্রভাষা।
এভাবে দিনের পর দিন অপমানিত, লাঞ্ছিত হতে হতে বাহান্নে জেগে উঠল বাঙালি। মায়ের ভাষার অপমান নয়। জ্বলে-পুড়ে মরবে, তবু মাথা নোয়াবে না চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তের কাছে।
সেই ফাল্গ–নে পিচঢালা পথে এগিয়ে চলল মিছিল। গগনবিদারী স্লোগানে প্রকম্পিত আকাশ-বাতাস। চলল গুলি। লুটিয়ে পড়ল মিছিলের অগ্রগামী তরুণের দল। জীবন দিলেন সালাম,
বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরসহ নাম না-জানা আরও অনেকে। রক্তস্নাত হল রাজপথ। সেই রক্ত স্রোতধারায় সিক্ত মাটিতে নির্মিত হল শহীদ মিনার।
সেই শহীদ মিনারে যাবে কোটি বাঙালি। যাবে পৃথিবীর কোটি মানুষ। বিনম্র শ্রদ্ধায় তারা স্মরণ করবে মহান বীর ভাষাসৈনিক ও শহীদদের।
##