কালিমুল্লাহ ইকবাল :
পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে গাজীপুর মহানগরের টঙ্গীর ঐতিহ্যবাহী টঙ্গী পূর্ব থানার পেছনে বিশাল গরু ছাগলের হাট বসছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে এই হাটের ইজারা পেয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও ঠিকাদার ব্যবসায়ী এম এ সাত্তার মোল্লা। ইতিমধ্যে হাটের সকল প্রস্তুতি কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলার বেপারীরা এরই মধ্যে ট্রাক ভর্তি গরু নিয়ে এই হাটে আসতে শুরু করেছে। এই হাটে ব্যবসায়ীদের জন্য থাকা, খাওয়া ও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা, বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা, পয়নিষ্কাশনের ব্যবস্থা, সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে গরু-ছাগল রাখার ব্যবস্থা করাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
হাটে প্রবেশ এবং বাহির হওয়ার পথ সমূহ হচ্ছে উত্তরার আব্দুল্লাপুর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী ষ্টেশন রোড হয়ে টঙ্গী পূর্ব থানা রোড, কিংবা কামার পাড়া মোড় হয়ে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে টঙ্গী পূর্ব থানা রোড বা তালতলা রোড অথবা জয়দেবপুর থেকে আসা গরু ছাগলের ট্রাক গুলো ঢাকা ময়মনসিংহ রোড থেকে মিল গেট থেকে সোনালি ট্যোবাকো রোড, ঢাকা ময়মনসিংহ রোড থেকে চেরাগ আলী হয়ে তিস্তার গেইট রোড, ঢাকা ময়মনসিংহ রোড থেকে কলেজ গেইট হয়ে দত্তপাড়া রোড হিমারদিঘী হয়ে কিংবা গাজীপুর সদর থেকে দিরাশ্রম হায়দ্রাবাদ হয়ে বনমালা দিয়ে দত্তপাড়া হয়ে হিমারদিঘী অথবা তিস্তার গেইট হয়ে মেঘনা রোড, অথবা কালীগঞ্জ পূবাইল এলাকার ব্যবসায়ী বা ক্রেতারা টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন হয়ে মেঘনা রোড এমন কি নতুন বাজার রেলওয়ে স্টেশনের সামনে দিয়ে মেঘনা রোড বা নতুন বাজার হয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার গেইট হয়ে গরু-ছাগল নিয়ে প্রবেশ বাহির হতে পারবেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক বসানো টঙ্গীর বিশাল এই গরুর হাটে। এছাড়া সু-শৃঙ্খলভাবে ক্রেতারা গরু- ছাগল ক্রয় করে কোন প্রকার বাধা বিঘ্ন ছাড়াই হাটে আসতে পারবে এবং পশু ক্রয় করে নিয়ে যেতে পারবেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, ইজারা হওয়া হাটের স্থানগুলোতে কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। হাটে নির্ধারিত স্থানে বিভিন্ন খামারের লোকজন এবং ব্যবসায়ীরা তাদের নির্ধারিত জায়গায় গরু বাঁধার জন্য বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে শেড তৈরি করছে। কোথাও কোথাও বাঁশ বাঁধার কাজ প্রায় শেষ। গরু- ছাগল নিয়ে আসা শুরু হলে ব্যবসায়ীরা খুঁটিকেন্দ্রিক ত্রিপল বা পলিথিন বসিয়ে নিজ নিজ পশু বেঁধে রাখবেন। অন্যদিকে, পশুর হাট-সংলগ্ন মেইন রোডে বড় বড় গেট করা হয়েছে। গেটগুলোয় চলছে আলোকসজ্জার কাজ। এসব পশুর হাট সাজাতে সাধারণ শ্রমিকের পাশাপাশি ইজারাদার পরিচালনায় দায়িত্বপ্রাপ্তরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইজারাদার এম এ সাত্তার মোল্লা বলেন, ‘সিটি করপোরেশন ও প্রশাসনের পরামর্শ, সহযোগিতা ও নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা আমরা এবার কুরবানির পশুর হাটের কাজ শুরু করেছি। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা গরু-ছাগল নিয়ে আসবে। তাদের শতভাগ নিরাপত্তা ও সকল সুযোগ সুবিধার কথা চিন্তা করে আমরা সকল প্রস্তুতি নিয়েছি।আমাদের এই পশুর হাটে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের শতভাগ নিরাপত্তার লক্ষ্যে প্রশাসনের পাশাপাশি ২৪ ঘন্টা সুশৃংখল, দালালের খপ্পর ও চাঁদাবাজ মুক্ত রাখার স্বার্থে ঈদের দিন ভোর পর্যন্ত পাঁচশত ভলেন্টিয়ার নিয়োজিত থাকবে। নিরাপত্তার বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার মো: মাহবুবুল আলম বলেন, মহাসড়কে পশুর হাট বসা নিষিদ্ধ। পশুর হাটগুলোতে নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত, চাঁদাবাজি প্রতিরোধ ও সড়কে চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট কাজ করবে। পশুহাটে পশু চিকিৎসক থাকবেন। পশু কোনো নির্ধারিত হাটে নেওয়ার জন্য জোর করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসিলের পরিমাণ সাইন বোর্ডে লেখা থাকতে হবে। সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া কোরবানির পশুবাহী যানবাহন থামানো যাবে না। পশুর হাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প রাখা হবে, জাল নোট শনাক্ত করার মেশিন ও এটিএম বুথও থাকবে। সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে পশুর হাট। মহাসড়কে যাতে কোনো প্রকার হাট না বসে, আমরা সে ব্যবস্থা নেব। পশুবাহী যানটি কোন হাটে যাচ্ছে, তা সামনের ব্যানারে লেখা থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিংবা অন্য কেউ পশুবাহী যানবাহন সড়ক-মহাসড়ক কিংবা নৌপথে থামাতে পারবে না সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া। কেউ থামালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টঙ্গী পূর্ব থানা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পশুর হাটে যাতে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না ঘটে এবং কেউ যাতে দালালের খপ্পরে না পড়ে, সে ব্যাপারে পুলিশ সজাগ রয়েছে। জাল টাকা রোধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।