জাহাঙ্গীর আলম (ব্যুরো প্রধান)
কাপাসিয়া, গাজীপুরঃ
গাজীপুরের কাপাসিয়ার তরগাঁও ইউানয়নের মাটিকাটা গ্রামের প্রতিবন্ধী মোক্তাদির মাঝির বসতঘর ও সীমানা প্রাচীর ভাঙ্গার প্রতিবাদে বুধবার ০৫ জুন বিকেলে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী। ওই প্রতিবন্ধীর বাড়ির সামনে সড়কে আয়োজিত মানববন্ধনে এ ঘটনার প্রতিকার ও দুষ্কৃতিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা। এ ঘটনায় প্রতিবেশি ইকুরিয়া গ্রামের ছয়জন দুষ্কৃতিকারীর নাম উল্লেখ করে গত শনিবার কাপাসিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন মোক্তাদির মাঝির স্ত্রী হাসনারা বেগম।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে প্রতিবন্ধী মুক্তাদির মাঝির বড় ভাই প্রবাসী রহমত উল্লাহ ছোট ভাইকে একটি টিনসেড বিল্ডিং করে বসবাসের সুযোগ করে দিয়েছেন। বসতঘরের নিরাপত্তার জন্য দক্ষিণ পাশে ইট দিয়ে দশ ফুট উচু ও চল্লিশ ফুট লম্বা একটি সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেছিলেন। প্রতিবেশি জহিরুল ইসলাম রুবেলের (৩৮) সাথে মুক্তাদির মাঝির দীর্ঘদিন যাবৎ জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এর জেরে গত শনিবার সন্ধ্যায় সড়কের মাটি খনন করার সময় জহিরুল ইসলাম রুবেল, মোঃ রুকন মিয়া (৩৭) ও মতিউর রহমান ভূইয়া (৫৫), বিল্লাল ভূইয়া (৫০), আইদুল ভূইয়া (২৫) ও রাসেল খান (২৭) সহ অজ্ঞাতনামা দুই-তিনজন এক্সকেভেটর ( ভেকু) দিয়ে সেই সীমানা প্রাচীরটি ভেঙ্গে ফেলেন। এ সময় মুক্তাদির মাঝি ও তার পরিবারের লোকজন সীমানা প্রাচীরটি ভাঙতে নিষেধ করলে তারা উত্তেজিত হয়ে তাদের উপর আক্রমণ চালায় এবং এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
মোক্তাদিরের স্ত্রী হাসনারা বেগম জানান, সীমানা প্রাচীরটি মাটির গভীর থেকে উপড়ে ফেলায় তার বসতঘরটিতে একাধিক স্থানে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে তার বাচ্চারা তিনটি কক্ষের কোনটিতেই রাতের বেলা ঘুমাতে রাজি হয় না। ফলে পরিবারের লোকজন নিয়ে এ ঝুকিপূর্ণ এ বাড়িতে বসবাস করা তাদের জন্য অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। স্বামী প্রতিবন্ধী হওয়ায় আর্থিক অনটনের মাঝে তাদের জীবন ধারণ করা যেখানে খুবই কষ্টের সেখানে তাদের পক্ষে নতুন করে ঘরের ভাবনা সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জহিরুল ইসলাম রুবেল জানান, তিনি সীমানা প্রাচীর ভাঙ্গেন নি। মাটিকাটা গ্রাম থেকে ইকুরিয়া বাজারগামী কাচা সড়কটি পাকা করণের কাজ করতে গিয়ে ঠিকাদারের লোকজন ওই সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলেছেন।
এ বিষয়ে ওই সড়কের ঠিকাদার মোঃ জাহাঙ্গীর কবির জানান, ওই রাস্তা নির্মাণের কার্যাদেশের নির্দেশনা অনুসারে এ সড়কটি সোজা করতে গিয়ে ওই বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মাঈনউদ্দিন জানান, সড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে কারোর বসত ঘরের কিংবা সীমানা প্রাচীরের একটি ইটাও ভাঙ্গার নির্দেশনা তাদের নেই। বরং জায়গা সংকুলান না হলে প্রয়োজনে রাস্তা কম করে নির্মাণ করা হবে। ওই প্রতিবন্ধীর বাড়ির সীমানাটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে ভাঙ্গা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।