মোঃ নাসির উদ্দিন গাজীপুর থেকে :
গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে জাংশন এলাকায় মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে গাজীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি এবং রেলওয়ের দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মতিউর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হযয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মো. সফিকুল ইসলাম।
দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক বলেন, এ দুর্ঘটনায় কারো অবহেলা বা গাফিলতি আছে কিনা তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্ত কমিটিকে দুই কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে রেলওয়ের পক্ষ থেকে দুইটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
এর মধ্যে সিওপিএস মো. শহীদুল ইসলামকে প্রধান করে ৫ সদস্যের আঞ্চলিক কমিটি করা হয়েছে। আর রেলেওয়ের ঢাকা বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিগন্যাল ও টেলিকমিউনিকেশন) সৌমিক শাওন কবিরকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, দুই কমিটিকেই তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
দুর্ঘটনার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “হিউম্যান ফেইলিওর অথবা টেকনিক্যাল প্রবলেমের কারণে ঘটে থাকতে পারে। তবে তদন্তের পর সঠিক কারণ জানা যাবে।
এর আগে শুক্রবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে ঢাকা-জয়দেবপুর রেল সড়কের গাজীপুরের ছোট দেওড়া কাজী বাড়ি এলাকায় টাঙ্গাইল কমিউটার ও তেলবাহী ট্রেনের মধ্যে ওই সংঘর্ষ হয় বলে জানিয়েছেন জয়দেবপুর স্টেশন মাস্টার হানিফ মিয়া।
এতে যাত্রীবাহী ট্রেনের অন্তত ছয়টি বগি ও তেলবাহী ট্রেনের চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়। আহত হয়েছেন যাত্রীবাহী ট্রেনের চালকসহ অন্তত চারজন।
তাদের উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি অনেকটা খালি অবস্থায় ঢাকার দিকে যাচ্ছিল এবং গতিও কম ছিল। এ কারণে হতাহতের ঘটনা কম হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা তেলবাহী ট্রেনটি আউটার সিগন্যালের দক্ষিণে আপলাইনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর চলতে শুরু করে। এসময় বিপরীত দিক আসা টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি একই লাইনে ঢুকে পড়লে সংঘর্ষ হয়। এতে বিকট শব্দে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
খবর পেয়ে গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস এবং রেলওয়ের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করেন।এবং একটি লাইন ক্লিয়ার করলে বিকেল থেকে ট্রেন চলাচল শুরু করে।
তবে দুর্ঘটনার কারণ ও হতাহতদের পরিচয় তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।