মোঃ নাসির উদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলম :
গাজীপুরের কাপাসিয়ার ঘাগটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ যেন দালালদের আখড়ায় পরিনত হয়েছে। সেবা গ্রহণকারীদের বিভিন্নভাবে হয়নি করে আইনের মারপ্যাঁচে নানা কৌশলে জিম্মি করা হয়। জন্ম সনদ সহ বিভিন্ন সেবা পেতে দালালদের মাধ্যম উদ্যোক্তা তার চাহিদা মতো নির্ধারিত ফ্রি থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। এসব বিভিন্ন অনিয়ম অভিযোগের খবর পেয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা উক্ত ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হলে চেয়ারম্যানের পালিত তার দালাল কর্তৃক সাংবাদিকদের লাঞ্চিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দৈনিক জনতা ও দি-ডেইলি নিউনেশন পত্রিকার কাপাসিয়া প্রতিনিধি হাজী সাইফুল ইসলাম জানান, উপজেলার ঘাগটিয়া ইউনিয়নের সালদৈ গ্রামের বাসিন্দা ভুক্তভোগী সাহাদত হোসাইন তার খালাতো ভাই। সম্প্রতি সাহাদত হোসাইন তার জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধনের জন্য ঘাগটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে যান। সেখানে উদ্যোক্তা মরিয়ম আক্তারের সহযোগিতা চান। মরিয়ম তার সাথে দামদর করে ৪ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। বেশ কয়েকদিন কালক্ষেপণ করে উদ্যোক্তা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভূয়া ঠিকানার একটি জন্ম নিবন্ধন ধরিয়ে দেন। কিন্ত তার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নেয়া নিবন্ধন আগের মতোই অপরিবর্তিত থাকে। এতে করে তার জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরীতে সমস্যা দেখা দেয়। গত রোববার সকালে এবিষয়টি ভুক্তভোগী সাহাদত হোসাইন উদ্যোক্তাকে জানাতে তাঁর কার্যালয়ে যায়। এসময় পরিষদে উপস্থিত ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সহ কয়েকজন তাঁকে এলোপাথাড়ি মারধর করে বের করে দেয়।
খবর পেয়ে সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম এবং ছানাউল্লাহ নূরী স্বশরীরে ঘাগটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ হিরন মোল্লাকে বিষয়টি অবগত করেন। এ সময় তাঁর কার্যালয়ে উপস্থিত সেই মাহবুবুর রহমান সহ বেশ কয়েকজন তেড়ে এসে সাংবাদিকদের উপর হামলা চালান। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যানের সামনেই তাদের টেনে হিচড়ে পরিষদ কার্যালয় থেকে বের করে দেন।
ভূয়া সনদ প্রদান ও সাংবাদিকদের হেনস্থার বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে সভাপতি অ্যাড. মাজহারুল ইসলাম সেলিমকে অবহিত করেন। তিনি তাৎক্ষণিক ভাবে আওয়ামীলীগ নেতা ও চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ হিরন মোল্লাকে মোবাইল ফোনে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করায় তাঁকে সতর্ক করেন এবং বিষয়টির সন্তোষজনক সমাধানের পরামর্শ দেন।
পরে বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগিতা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম লুৎফর রহমানের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি জানান।
তিনি সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানকে ডেকে অভিযুক্ত ওই উদ্যোক্তাকে তাঁর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার নির্দেশ দেন।