লোমহর্ষক খুনের ঘটনার তিন মাস পর ০২ জন আসামী গ্রেফতার করে টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন জাহিদুল ইসলাম (৩৫), পিতা-মৃতঃ হযরত আলী, সাং-লামাপাড়া, থানা-বারহাট্টা, জেলা নেত্রকোনা, গাছা থানাধীন মালেকের বাড়িস্থ এমাজিং ফ্যাশন লিঃ এর ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
গত ১ মার্চ রাত ১১.৩০ ঘটিকার সময় তার অফিসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ঢাকায় নামিয়ে দিয়ে আসার পথে ঢাকা হইতে টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাছিমপুর পিপলস সিরামিকের সামনে পৌঁছাইয়া গাড়ী হইতে নেমে প্রস্রাব করিতে গেলে অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন দুষ্কৃতিকারী অতর্কিতভাবে পিছনে দিক থেকে আসিয়া ভিকটিম জাহিদুল ইসলাম‘কে ঘিরিয়া ধরে এবং তাহার নিকট থাকা মালামাল ও জিনিসপত্র কাড়িয়া নেওয়ার চেষ্টা করে। ভিকটিম জাহিদুল ইসলামের সাথে দুষ্কৃতিকারীদের ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে মালামাল কাড়িয়া নিতে ব্যর্থ হইয়া দুষ্কৃতিকারীরা ধারালো অস্ত্র সুইচ গিয়ার চাকু দ্বারা ভিকটিম জাহিদুল ইসলামের ডান পায়ের উরুতে ও মাথায় আঘাত করিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে। ঘটনাস্থলের পাশেই টঙ্গী পশ্চিম থানার টহলরত পুলিশ এবং পথচারী লোকজন আগাইয়া আসিলে দুষ্কৃতিকারীরা পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে টঙ্গী পশ্চিম থানার টহলরত এসআই কাজী নেওয়াজ সঙ্গীয় ফোর্সসহ পথচারী লোকজনের সহায়তায় ভিকটিম‘কে চিকিৎসার জন্য শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল টঙ্গী, গাজীপুর নিয়ে যায়। পরীক্ষা শেষে কর্তব্যরত ডাক্তার জাহিদুল ইসলামকে মৃত বলিয়া ঘোষনা করেন। পরবর্তীতে টঙ্গী পশ্চিম থানার পুলিশ ভিকটিমের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত শেষে ময়না তদন্তের জন্য এসআই কাজী নেওয়াজ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গাজীপুরে প্রেরণ করেন। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের বড় ভাই মোঃ সাইফুল ইসলাম, বাদী হয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে টঙ্গী পশ্চিম থানার মামলা নং-০৪, পেনাল কোড রুজু করা হয়।
মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই কাজী নেওয়াজ মামলা রুজুর পর হইতে পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির (বিপিএম সেবা) এবং উপ-পুলিশ কমিশনার অপরাধ (দক্ষিণ) বিভাগ ইলতুৎ মিশ মামলার মুল রহস্য উৎঘাটন ও আসামী গ্রেফতারের জন্য দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। মামলার ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধী/দুষ্কৃতিকারীদের শনাক্ত এবং গ্রেফতারের লক্ষ্যে ঘটনাস্থলসহ আসামীদের পালিয়ে যাওয়ার গতি পথের বিভিন্ন সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করা হয়। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের লক্ষ্যে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন থানা এলাকাসহ কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়ীয়, কিশোরগঞ্জ ও ঢাকা জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই(নিঃ)/কাজী নেওয়াজ তদারকী কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় বিভিন্ন গোপণীয় সোর্সের মাধ্যমে ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ শাহ আলম এর নেতৃত্বে এসআই(নিঃ)/ইয়াসিন আরাফাত, এসআই(নিঃ)/কাজী নেওয়াজ সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ অভিযান পরিচালনা করে আসামী ১। শিপন(২৩), পিতা-ছবির মহানগর, টঙ্গী দত্তপাড়া থানা-টঙ্গী পূর্ব, গাজীপুর মহানগর, গাজীপুর দিঘীরপাড় এলাকা হইতে অপর আসামী ২। মোঃ রাব্বি(২১), পিতা-মোঃ রুবেল সাং-এরশাদনগর, থানা-টঙ্গী পূর্ব, গাজীপুর মহানগরকে এরশাদনগর এলাকা হইতে গ্রেফতার করা হয় ।
আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা মামলার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করিয়া ঘটনার দিন ইং ০১/০৩/২০২১ তারিখ রাত ২.৩০ ঘটিকার সময় তারা অপরাপর জড়িত। ধৃত আসামী শিপনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, ঘটনার সময় ব্যবহৃত ধারালো ছোরা/চাকু ঘটনাস্থল সংলগ্ন কাদেরিয়া টেক্সটাইল এর দেওয়াল সংলগ্ন পরিত্যক্ত জায়গায় তারা ঢিল মেরে ফেলে আসে । পরবর্তীতে সহকারী পুলিশ কমিশনার (টঙ্গী জোন) পীযূষ কুমার দে এবং টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ্ আলম মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কাজী নেওয়াজ সঙ্গীয় ফোর্সসহ গ্রেফতারকৃত আসামী শিপন‘কে সাথে নিয়ে তথায় উপস্থিত হয়ে মামলার হত্যায় ব্যবহৃত (চাকু) জব্দ করেন। আসামীদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে অপরাপর জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।