সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাঠের পর মাঠে আবাদ হয়েছে খিরা। উপযোগী আবহওয়া থাকায় খিরার বাম্পার ফলনও হয়েছে। এছাড়া এবার বাজার দর ভালো থাকায় খুশি কৃষকেরা। চলতি মৌসুমে সারা দেশে এই উপজেলা থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ২৫ টন খিরা তাড়াশ থেকে যাচ্ছে সারা দেশে। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ৪০০ হেক্টর জমিতে খিরার আবাদ হয়েছে, সিরাজগঞ্জ জেলার ভিতরে সবচেয়ে তাড়াশ উপজেলায় খিরার আবাদি জমি বেশি খিরা বিক্রির জন্য মৌসুমি হাট বসেছে তাড়াশে উপজেলা ৩ টি স্থানে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অল্প খরচে বেশি লাভের আশায় কৃষকেরা খিরা চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
খিরার বড় হাট এখন বারুহাস ইউনিয়নের দিগুরিয়া গ্রামে এখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খিরা বেঁচা কেনা চলে। প্রতিদিন বসে এই হাট। হাটে কৃষকরা ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত প্রতিমণ খিরা বিক্রি করছেন। বিক্রির জন্য কৃষকদের দিতে হয় না কোনো খাজনা। তাড়াশ উপজেলার বারু হাস, দিঘুরিয়া, সড়াবারি, সাতপাড়া, ছাতানদিঘি, সান্দুরিয়া, তালিম, খোসালপুর, নামো সিলট, কোহিত, দিয়ারপাড়া, খাসপাড়া, তেঁতুলিয়া, ক্ষীরপোতা, বরগ্রাম উপজেলার বিশাল এলাকাজুড়ে খিরার আবাদ হয়েছে। খিরা বিক্রি করার জন্য দিঘুরিয়া এলাকায় মৌসুমী ব্যবসায়ীরা গড়ে তুলেছে আড়ৎ। প্রতিদিন সকাল থেকে বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা খিরা আড়ৎতে আনতে শুরু করেন। আর আড়ৎ থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররা খিরা কিনতে আসেন।
প্রতিদিন কয়েক মেট্রিক টন খিরা বেঁচা-কেনা হচ্ছে এখানে। দুপুরের পর শুরু হয় ট্রাক লোড পরে ঢাকা, রাজশাহী, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ট্রাক যোগে চলে যায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার খিরা। বারুহাস ইউনিয়নের দিঘুড়িয়া গ্রামের এমদাদুল হোসেন বর্গা চাষি বলেন, ‘গত বছর ৪১ শতাংশ জমির খিরা বিক্রি করে ভালোই লাভ হয়েছিল। এবারও চার বিঘা জমি বর্গা নিয়ে খিরার চাষ করেছি। ফলন খুবই ভালো হয়েছে এবং দামও ভালো পাচ্ছি।’ তাড়াশ উপজেলার দিয়ার পাড়া গ্রামের কৃষক ফজেল আলী ও মজ্জেম হোসেন আরও অনেকেই বলেন, ‘প্রতি বছর আমি ধান ও সরিষা চাষ করি।
এবার আমরা জমিতে খিরা চাষ করেছি। প্রতি বিঘায় ৯০ থেকে ১২০ মণ ফলন হয়েছে। বর্তমান বাজারে খিরা ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার দর এ রকম থাকলে প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ২০ হাজার টাকা লাভ হবে।’ বারুহাস ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মোঃ মনিরুজ্জামান মজনু মেম্বার বলেন, এ হাটে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পাইকারী ব্যবসায়ীদের সকল সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকি, এবং থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা করেছি, যাতে আমাদের মৌসুমী হাটে একজন ব্যবসায়ী কোনোভাবে হয়রানি না হয়।
ঢাকা থেকে আসা পাইকার রা বলেন, খিরার প্রচুর আমদানি হয়েছে, দাম মোটামুটি ঠিক আছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (উপ-পরিচালক) বাবলু কুমার সূত্রধর “দৈনিক সময়ের দেশ “কে বলেন, জেলার ফসলি জমি খিরা চাষের জন্য উপযোগী। উপজেলা কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক কৃষকদের খিরা চাষে উৎসাহ ও পরার্মশ দিয়ে সহযোগীতা করে আসছেন। চলতি মৌসুমে জেলায় ৬৬৬ হেক্টর জমিতে খিরা চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের মাত্রার চেয়ে ৭৫ হেক্টর বেশি।