আগামী ১৯ নভেম্বর গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের সর্ববৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ মহানগরের এই সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে
ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। সম্মেলনকে সফল করতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
নগরীর ওয়ার্ড ও থানা গুলোতে হচ্ছে আ’লীগের কর্মিসভা। এসব কর্মিসভায় প্রতিদিনই
মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য যোগ দিয়ে সম্মেলনকে সফল ও সার্থক করতে
বিশেষ দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। মহানগর আ’লীগের নতুন নেতৃত্বে কারা আসবেন তা
নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে আলোচনা। বিশেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক
পদ নিয়েই তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে জল্পনা কল্পনা।
সম্মেলনকে ঘিরে ভাওয়াল রাজবাড়ির মাঠের চারপাশ প্রার্থীদের ব্যানার, ফেস্টুন,
বিলবোর্ড রঙ্গীন পোস্টার শোভা পাচ্ছে। এছাড়াও শহরের প্রধান সড়ক ও নগরীর বিভিন্ন
পয়েন্টে সম্ভাব্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীদের ছবিসংবলিত ব্যানার, ফেস্টুন,
বিলবোর্ড ও তোরণ শোভা পাচ্ছে। পছন্দের প্রার্থীদের সমর্থনে নেতাকর্মীরা ব্যাপকভাবে
প্রচারণা চালাচ্ছেন।
সভাপতি পদে সম্ভাব্য যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ
আহসান রাসেল, অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান। সাধারণ সম্পাদক পদে যাদের নাম
শোনা যাচ্ছে তারা হলো আতাউল্লাহ মন্ডল, অ্যাডভোকেট আব্দুল হাদী শামীম, মো.
মতিউর রহমান মতি, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, আফজাল হোসেন সরকার
রিপনসহ আরো কয়েকজন।
গাজীপুর মহানগর আ’ লীগের সভাপতি প্রার্থী হিসেবে প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা ভাওয়াল বীর
শহীদ আহসান উল্ল্যাহ মাস্টারের সুযোগ্য পুত্র চারবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য যুব ও
ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের নাম শোনা যাচ্ছে। নেতাকর্মীরা বিভিন্ন মাধ্যমে
তার সমর্থনে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে।
জননেত্রী শেখ হাসিনার দিক-নির্দেশনায় জাহিদ আহসান রাসেল গাজীপুরে তথা সারা
দেশে যুবদের আত্মকর্মী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে একের পর কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে
যাচ্ছেন। ধাপে ধাপে ক্রীড়াঙ্গনকে সমৃদ্ধ করে তুলছেন তিনি। নেতাকর্মীরা বলেন, এই
হেভিওয়েট প্রার্থী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পেলে তৃণমূল
থেকে নগরীর প্রতিটি ইউনিট সুসংগঠিত হবে, দল আরো বেশি শক্তিশালী হবে।
সভাপতি প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মহানগর আ’লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বর্ষীয়ান
রাজনীতিক অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানের নাম শোনা যাচ্ছে। তিনি টঙ্গী পৌরসভার
একাধিকবার নির্বাচিত মেয়র ও জেলা আ’ লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আ’লীগের
রাজনীতিতে এই দিকপাল প্রবীণ পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে
গাজীপুরের মাটি ও মানুষের জন্য কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
গাজীপুর মহানগরের আরেক বর্ষীয়ান রাজনীতিক আতাউল্লাহ মন্ডল যিনি মহানগর
আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে গাজীপুরে
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি এবার মহানগর
আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন বলে জানা গেছে।
গাজীপুর মহানগর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আব্দুল হাদী শামীম বলেন, আমি
দল থেকে কিছু চাওয়ার লোভে রাজনীতি করি না। আমি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শকে
ভালোবেসে জননেত্রী শেখ হাসিনার কর্মী হিসেবে রাজনীতি করছি। গাজীপুর মহানগর
আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকান্ডকে আরো
এগিয়ে নিয়ে যাব।
আরেক বর্ষীয়ান রাজনীতিক মতিউর রহমান মতি যিনি ভাওয়াল বীর শহীদ আহসান
উল্ল্যাহ মাস্টার এমপির ছোট ভাই। তিনি বর্তমানে গাজীপুর মহানগর আ’লীগের যুগ্ম
সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এবার তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী
হয়েছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মানুষের পাশে থেকে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত
করেন তিনি।
ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন গাজীপুর মহানগর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে
প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন। মহানগর আ’ লীগের তৃণমূল থেকে শুরু করে দলীয়
নেতাকর্মীরা তার তার সমর্থনে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। সাজ্জাদ বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে শিক্ষা-শান্তি-প্রগতি ছাত্রলীগের
মূলনীতির পতাকাতলে দীপ্ত চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ১৯৮৬ সালে কাউলতিয়া ইউনিয়ন
ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৭ সালে ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের
সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালে জয়দেবপুর থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক
নির্বাচিত হন। ১৯৮৯ সালে ঢাবির আইন বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৯০-এর স্বৈরাচার
এরশাদবিরোধী গণআন্দোলন তাকে ছাত্র রাজনীতিতে লেগে থাকার তীব্র অনুপ্রেরণা
জোগায়; যার ফলে ১৯৯১ সালে ঢাবির কবি জসীমউদ্দীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক
নির্বাচিত হন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৪ সালে ঢাবির ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক
নির্বাচিত হন। ছাত্রলীগের সক্রিয় ছাত্রনেতা সাজ্জাদ হোসেন জননেত্রীর শেখ হাসিনার
আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে ১৯৯৮ সালে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
মেধাবী এই ছাত্রনেতা বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে থেকে নেতৃত্ব
দিয়েছেন। সাজ্জাদ ঢাবির ছাত্রলীগের সোনালি অর্জন। আ’লীগের বিশ্বস্ত ও পরীক্ষিত এই
নেতা প্রার্থী হওয়ায় তৃণমূলসহ সচেতনমহলে সাড়া পড়েছে। তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত
হলে দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করবো।
গাজীপুর মহানগর আ’লীগের সহসভাপতি বর্ষীয়ান রাজনীতি আফজাল হোসনে সরকার
রিপন এবার সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বলেন, আমি মানুষের পাশে
দাঁড়ানোকে সর্বোচ্চ রাজনীতি বলে মনে করি। করোনা মহামারির কারণে গাজীপুর
মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে হাজারো মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছিল। তখন মানুষের ঘরে
ঘরে কর্মীদের নিয়ে খাবার পৌঁছে দিয়েছি। আমি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে
তৃণমূলসহ দলকে আরো সুসংগঠিত করব।
কয়েকজন নেতা জানান, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন তা নিশ্চিত করে কেউ
বলতে পারছেন না। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী
শেখ হাসিনার উপর।