গাজীপুরের গাছা থানার কুনিয়া পাচর ও তারগাছ এলাকায় স্থানীয় এক কাউন্সিলর পুত্রের ছত্রচ্ছায়ায় সন্ত্রাসীদের আস্তানা গড়ে উঠেছে এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। এলাকাটি গাছা থানার শেষ সীমানায় অবস্থিত হওয়ায় থানা পুলিশের অভিযানের সময় সন্ত্রাসীরা সহজেই টঙ্গী পশ্চিম থানার সাতাইশ সুখি নগর, খরতৈল এলাকা দিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়। আবার টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশের অভিযানের সময় সন্ত্রাসীরা কুনিয়া পাচর এলাকায় এসে নির্বিঘ্নে আশ্রয় নেয়। থানা পুলিশের অভিযানের সময় দুই থানার সীমান্তবর্তী এলাকাটিতে পুলিশের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের যেন কানামাছি খেলা হয়। ৯ নভেম্বর রাত আড়াইটায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরা এলাকায় স্যাটার্ন গার্মেন্ট কারখানার সামনে একদল ডাকাত অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পরিবহণে ডাকাতির প্রস্তুতি নেয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সন্ত্রাসীদের পাকড়াও করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হলেও এদের অন্য সহযোগীরা তারগাছ এলাকার দিকে পালিয়ে যায়। পরে ওই রাতেই গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী গাছা থানার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুনিয়া পাচর ও তারগাছ এলাকায় সন্ত্রাসীদের আস্তানায় হানা দেয় জিএমপি দক্ষিণ বিভাগের বিপুল সংখ্যক পুলিশ। অভিযানকালে গ্রেফতারকৃতদের আরও ৪ সহযোগীকে লুণ্ঠিত ৩০টি মোবাইল সেট, ১টি ল্যাপটপ, ১টি ডেস্কটপ ও ১টি সিপিইউসহ আটক করা হয়। পরে গ্রেফতারকৃতরা থানায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সব সহযোগীর নাম, ঠিকানা ও বর্তমান অবস্থান প্রকাশ করে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, এরা বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা হলেও প্রায় প্রত্যেকে গাছা থানার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের তারগাছ তথা কুনিয়া পাচর এলাকায় বিভিন্ন বাড়িতে ভাড়া থাকে। স্থানীয় কাউন্সিলরপুত্রের ছত্রছায়ায় তারা ওই এলাকায় অস্থায়ীভাবে অবস্থান নিয়ে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও মাদক কারবারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে পরিচালনা করে আসছে। এছাড়াও ওই
কাউন্সিলরপুত্রের সহযোগিতায় ওই এলাকায় একটি দুর্ধর্ষ কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে। ওই কিশোর গ্যাং সদস্যদের মাদক কারবারে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করায় ১২ মে রাতে সন্ত্রাসীরা এলাকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। এ সময় তারা বিভিন্ন বাসা বাড়িতে চড়াও হওয়া ছাড়াও রাস্তায় যাকে পেয়েছে তাকেই পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেছিল। ৯ নভেম্বর রাতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতারকৃত সন্ত্রাসীরা হলো, তারগাছ এলাকায় জিয়াউর রহমান (৩২), মারুফ আহম্মেদ (২০), আকাশ ওরফে আক্কাস (১৯), পাভেল (১৯), কুনিয়া পাচরের মিরাজ আহম্মেদ (২৫), কুনিয়া তারগাছের তানজিল আহম্মেদ (১৮), সোহেল রানা (৩২), উজ্জল মিয়া (২১), এরশাদ নগর
৩ নং ব্লকের আব্দুর রহিম (২৫)। এ চক্রের অপর দুই সদস্য গাছা থানার কুনিয়া তারগাছ এলাকার বায়েজিদ (২৫) ও বাসন থানার চৌধুরীপাড়ার এখলাস (২২) পলাতক রয়েছে। মঙ্গলবার টঙ্গী পশ্চিম থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জিএমপি দক্ষিণ বিভাগের পুলিশ কর্মকর্তারা এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।