চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন চট্টগ্রাম অটো টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা মোঃ জানে আলম।
চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা এজাহার ও ভুক্তভোগীর তথ্য মতে, চট্টগ্রাম আদালত ভবন এলাকায় পূর্বের এক অপহরণ মামলায় হাজিরা দিতে এসে এই সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন মামলার বাদী চট্টগ্রাম অটো টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়ন’র (রেজিঃ নং চট্র ১৩০৯) সাধারণ সম্পাদক জানে আলম (৪২)।
২৭ শে জুলাই বুধবার বেলা ১১:৪০ এর দিকে ভুক্তভোগী মোঃ জানে আলম, পিতা মৃত গুরা মিয়া, তাকে ০৯ই ডিসেম্বর ২০২১, হত্যার উদ্দ্যশে চট্টগ্রাম কর্ফুলী শাহ আমানত ব্রীজ হতে অপহরণ পূর্বক নদীর তীরবর্তী ব্রিকফিল্ড এলাকার নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে সাথে থাকা মোবাইল টাকা এবং স্বর্নের আংটি ছিনিয়ে নেয়। হত্যার উদ্দেশ্যে মারধরসহ জোরপূর্বক অলিখিত স্ট্যাম্পে সাক্ষর আদায় করে এবং সেই সাথে আসামীদের সাথে থাকা ভাড়াকৃত পতিতার সহিত জোর পূর্বক একাধিক আপত্তিকর ছবি মোবাইলে ধারণ করে। পরবরর্তীতে চোখ বেঁধে কিছুদূর হাঁটিয়ে ভোর ০৪:৩০ মিনিটের দিকে শাহ আমানত সেতু এলাকায় ছেড়ে দেয়।
পরবর্তীতে ভিকটিম চট্রগ্রাম কোতোয়ালী থানায় উপস্থিত হয়ে এজাহারে উল্লেখিত আসামীদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২, মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেন।এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম কোতোয়ালী থানা পুলিশ তদন্ত-পূর্বক সত্যতা প্রাপ্তিতে প্রতিবেদন দাখিল করেন এবং আসামদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু হলে আসামিদের গ্রেফতারপূর্বক জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
ঘটনার দিন, ২৭ শে জুলাই বুধবার যথারীতি পূর্বের অপহরণ মামলায় হাজিরা প্রদানের নিমিত্তে ভিকটিম চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১,এ হাজিরা সম্পন্ন করে বাসায় ফেরার পথে চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালত ভবনস্থ জেলা জজ বিল্ডিং’র ফুট ওভারব্রিজ সংযোগস্থলে পৌঁছালে আগে থেকে উৎপেতে থাকা পূর্বের মামলায় জামিনে থাকা এজাহারে উল্লেখিত সন্ত্রাসী বাকলিয়া নোমান কলেজের কথিত ছাত্র লীগ নেতা, নতুন ব্রীজ এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ, ভুমি দস্যু ও কিশোর গ্যাং লিডার মোহাম্মদ আজমির শাহ্ ‘র নেতৃত্বে রবিন, সুজন, মাঈনউদ্দিন,লেদু সহ ১০/১৫ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা করলে ভিকটিমের মুখের ছোয়াল দাঁত ভেঙে, চোখ ও কানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে এক নং আসামী বুকের উপর পা দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে পকেটে থাকা ৪৬০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে আইনজীবী ভবনের আশেপাশের লোকজন ভিকটিমের চিৎকার শুনে বাঁচাতে এসে হামলাকারী সুজনকে আটক করে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে হস্তান্তর করেন। এ সময় অন্য আসামিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত লোকজন ভিকটিমকে জরুরি চিকিৎসার স্বার্থে দ্রুত চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী জানে আলম আরও জানান দীর্ঘদিন যাবত চিহ্নিত সন্ত্রাসী কথিত ছাত্রনেতা আজমীর শাহ চট্টগ্রাম শাহা আমানত সেতু সংলগ্ন বাকলিয়া নোমান কলেজ সড়ক, ব্যস্তূ হারা কলোনি ও নতুন ব্রিজ টু কোতোয়ালি সড়কে চলাচলকারী টেম্পো ও মাহেন্দ্রা চালক, হেল্পার থেকে জোর পূর্বক চাঁদা আদায় করে আসছিল। স্থানীয় এলাকাবাসী তার হাতে জিম্মি, প্রকৃতপক্ষে এইসব বিষয়ে সংগঠন পক্ষ থেকে বারবার প্রতিবাদ করার কারণে তার উপর এই বর্বরোচিত হামলা হয়েছে।
এই বিষয়ে মামলার এজাহার উল্লেখিত আসামি মোহাম্মদ আজমির শাহ’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান আমার বিরুদ্ধে উল্লেখিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, জানে আলম উল্টো আমার সঙ্গীদের উপর হামলা করেছে। আমার দুইজন সহকর্মী গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
এই বিষয়ে কতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান এজাহার পেয়েছি এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।