শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের আঘাতে পঙ্গু হয়ে সাদা মিয়া (৪৫) নামে এক গ্রামপুলিশ মানবেতর জীবনযাপন করছে অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ ভুক্তভোগী সাদা মিয়ার। অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না সাদা মিয়া। পরিবারের সদস্যরা তাকে ছেরে অন্যত্র চলে গেছেন। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। সাদা মিয়া উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের নাচনমহরী গ্রামের মৃত কলিম উদ্দিন চৌকিদারের ছেলে। সাদা মিয়ার পিতা কলিম উদ্দিন ও ছিলেন কাংশা ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ। তিনি মারা যাওয়ার পর থেকেই সাদা মিয়া গ্রামপুলিশের চাকুরি করে আসছেন। ২ ছেলে ৫মেয়েসহ ৭ সদস্যের পরিবার সাদা মিয়ার। বাড়ি ভিটার এক খন্ড জমি আর গ্রামপুুলিশের চাকুরি ছাড়া সহায় সম্বল বলতে তার আর কিছুই নেই। সাদা মিয়া জানান, ২০২০ সালের ১৯ জুলাই পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ভিজিএফএর চাল বিতরন করা হয়। গুরুচরনদুধনই বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়ে চাল বিতরনের সময় ১০ কেজি করে চাল বিতরনের কথা থাকলেও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল হক ৬/৭ কেজি করে চাল বিতরন করেন। বিষয়টি স্হানীয় সাংবাদিকের দৃষ্টিতে এলে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুবেল মাহমুদ ঘটনাস্থলে আসার সংবাদ শুনে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল হক তার লোকজন দিয়ে গুদামে রক্ষিত অতিরিক্ত চাল দ্রুত সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন। তার অনুগত লোকজন অতিরিক্ত চাল দ্রুত সরিয়ে বিভিন্ন দোকানও আশপাশের বাসা বাড়িতে সরিয়ে রাখেন। এতেও পার পাননি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল হক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুবেল মাহমুদ ঘটনাস্থলে এসে সিলিপের তুলনায় অতিরিক্ত চাল পান গুদামঘরে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ দাঁড়িয়ে থেকে অতিরিক্ত চালগুলো উপস্থিত দরিদ্র মানুষের মাঝে বিতরন করেন। নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ চাল বিতরন শেষে চলে আসলে চেয়ারম্যান জহুরুল হক তার কথায় আমি চাল সরিয়ে না নেয়ার অপরাধে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি আমাকে মারধর করেন। সজোড়ে আমার ঘারে আঘাত করলে আমি মারাত্মকভাবে আঘাত প্রাপ্ত হই। এরপর থেকে আমি চিকিৎসা করে আসছি। লক্ষাধিক টাকা ঋনধার করে চিকিৎসার কাজে ব্যায় করেও আমার শারীরিক অবস্হার উন্নতি না হয়ে দিনে দিনে অবনতি হয়ে পঙ্গু হয়ে পরেছি। বর্তমানে আমি কোন হাটাচলা করতে পারছি না। টাকা পয়সার অভাবে চিকিৎসা ও কারাতে পারছেন না তিনি। পরিবারের সদস্যরাও তাকে রেখে অন্যত্র চলে গেছেন। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। এব্যাপারে সাদা মিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট বিচার চেয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। সাবেক ইউএনও রুবেল মাহমুদ অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্যবস্থা গ্রহনের কথা বললেও পরবর্তীতে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, সাদা মিয়াকে আমি মারধর করিনি। তিনি বলেন আমার বিরুদ্ধে স্থানীয় কয়েকজন ইউপি সদস্য ষড়যন্ত্র করে আসছে। সাদা মিয়াকে মারধরের ঘটনাটি মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। তিনি আরও বলেন সাদা মিয়া ৫/৭ টি সিলিপের চাল উত্তোলন করলে তাকে আমি শুধু ধমক দিয়েছিলাম।