অন্ধ জনের ব্যথা ক’জন বুঝতে পারে! যে পেয়েছে আঘাত, সেইতো বুঝতে পারে। তাই চোখের অবশিষ্ট সামান্য আলো যেন শেষ না হয় এমনই ব্যাকুলতা প্রকাশ করেছে ঝিনাইগাতীর ব্রীজপাড় প্রতিবন্ধি স্কুলের ৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী কিশোরী ইফা খাতুন(১৩)। ইফা শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর ইউনিয়নের থানা রোডের ইমরান হোসেনের মেয়ে। ইফার পিতা পেশায় একজন দর্জি। ৩ ছেলে মেয়ের মধ্যে ইফা বড়।
ইভার পরিবার সুত্রে জানা যায়, ইফার জন্মের ৯ দিনের মাথায় বাম চোখে সামান্য ব্যতিক্রম মনে হলেও বিষয়টি পরিবারের লোকজন আমলে নেইনি। ইফার বয়স যখন ৬ মাস তখন তার চোখে ছানি দেখা দেয়। ডাক্তারের স্মরনাপন্ন হলে সাধ্যমত চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পরেও বয়স বাড়ার সাথে সাথে ধীরে ধীরে বাম চোখটি একেবারেই অকেজো হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ডান চোখের সমস্যা দেখা দেয়। ইফার গরীব পিতা-মাতা তাদের আদরের সন্তানের অন্য চোখটি বাচাঁতে বড় বড় ডাক্তার দেখান। ইফাকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে তার বাবা-মা বর্তমানে সবর্শান্ত। ইফা বতর্মানে বাংলাদেশ ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের রেটিনা বিভাগের প্রধান ডা: মমিনুল ইসলামের তত্বাবধানে চিকিৎসাধীণ রয়েছে। ডাক্তারের পরামর্শ মতে ২৩শত পাউয়ারের চশমা পড়েও কাজ হচ্ছেনা। এর জন্য প্রতি মাসে ঢাকায় নিয়ে ডান চোখটি ওয়াস করা, ঔষধ ও যাতায়াত সহ খরচ হয় প্রায় ৫ হাজার টাকা। এছাড়া বাড়ীতে আনার পর সারা মাসে ড্রপ ও ঔষধ বাবদ খরচ হয় প্রায় ৫ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকা চিকিৎসা বাবদ খরচ যোগাতে হয় ইফার গরীব বাবা-মাকে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের রেটিনা বিভাগের প্রধান ডা: মমিনুল ইসলাম ইফার বাবাকে জানিয়েছেন, আগামী ৬ মাস একই প্রক্রিয়াতে ইফার চিকিৎসা চলবে। এতে ইফার সামান্য ভাল থাকা ডান চোখটির যদি উন্নতি দেখা না দেয়, সেক্ষেত্রে ইফাকে বিদেশ নিয়ে উন্নত মানের চিকিৎসার মাধ্যমে ভাল করা যেতে পারে। এমতাবস্থায় ইফার বাবা-মা তার চিকিৎসার খরচ বহন করতে হিমশিম খাচ্ছে।
কিশোরী ইফা বলেন, এই সুন্দর পৃথিবীকে আমি দেখতে চাই। আমি আপনাদের মাঝে বাঁচতে চাই। তাই এই প্রতিনিধির মাধ্যমে দেশ-বিদেশের সকলের কাছে আমার বাকি ১টি চোখের আলো ধরে রাখতে সকলের কাছে সহযোগীতা চাই।
ইফার বাবা ইমরান হোসেন জানান, “আমার মেয়ের চিকিৎসার খরচ যোগান দিতে গিয়ে আজ আমি সর্বশান্ত। তার পড়েও মেয়েটিকে ভাল করতে পারছিনা। এতদিন এক চোখে কোন রকমে দেখতে পেতো, সেটার আলোও দিনদিন কমে আসছে। তার অনাগত ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি দিশেহারা। তাই আমার মেয়ের চোখের আলো ধরে রাখতে সমাজের অর্থবান ও বিত্তবানদের কাছে সহযোগীতার হাত বাড়িয়েছি।” যদি কেহ ইফার চিকিৎসা বাবদ সহযোগীতা করতে চান, তাহলে ০১৪০৫-৪৬৯৯৬১ নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেছেন ইফার বাবা ইমরান হোসেন।