পুলিশ জনগণের শত্রু নয়, জনগণের বন্ধু। তারই বাস্তব প্রমান দিলেন টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার এসআই কাজী নেওয়াজ। তার এক মানবিক ফেসবুক স্ট্যাটাস এর ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাবা মা ফিরে পায় ৭ বছর বয়সী রুপমকে। সন্তানকে ফিরে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা বাবা-মা।
সোমবার রাতে টঙ্গী পূর্ব থানার এসআই কাজী নেওয়াজ শিশু রূপমকে তার বাবা সাগর ও মা রূপা বেগমের হাতে তুলে দেন।
টঙ্গী পূর্ব থানার এসআই কাজী নেওয়াজ জানান,
যথারীতি প্রতিনিয়িত সেবামূলক কাজ করে থাকি দেশরে জন্য, দেশের জনগনের জন্য, প্রতিটি মানুষ নিশ্চিতে ঘুমাচ্ছে, তাদের জন্য রাত জেগে নিরাপত্তা দিচ্ছে আমাদের মত লক্ষ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা, যাই হোক গত রবিবার যখন টহল ডিউটি করছি রাত আনুমানিক ১১ঃ৪০ টা এমন সময় ফোন, যথারীতি সালামের সাথে বলছি কে আপনি তার নাম টা বললো ( মোজাফ্ফর), একটি বাচ্চা ছেলে অনেক সময় ধরে টঙ্গী রেলস্টেশনের পাশে বসে কান্নাকাটি করছে। আমি সেখানে গিয়ে দেখি ১০/১১ বছরের একটি বাচ্চা, তাকে জিজ্ঞেসা করলাম কি হয়েছে বাবা,সে আমাকে বললো, ট্রেনে করে এসেছে, কিন্তু আর ফিরে যেতে পারছেনা, কারন সে আর চিনতে পারছেনা, যদি ভুল করে অন্য কোথাও আবার চলে যায়, যানতে চাইলাম তার নাম সে আমাকে উত্তর দিলো (রুপম) বাড়ির ঠিকানা জিজ্ঞেসায় সে জানালো তার পিতা -সাগর, মাতা- রুপা, বাড়ি/ গ্রাম সিস্টোর/ভাটাজুরি,থানা কোনটা বলতে পারেনা, জেলা-ময়মনসিংহ, বাবার মোবাইল নাম্বার কি আছে, সেটাও বলতে পারে না, তবে কি করি? এবার নিলাম তাকে আমাদের হেফাজতে। বললাম কিছু কি খেয়েছো,সে বললো না, নিলাম তাকে রাতের খাবার খাওয়ানোর জন্য একটি খাবার হোটেলে। তারপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেই।
তিনি আরও জানান, তাকে রেখেছিলাম আমাদের টঙ্গী পূর্ব থানার পুলিশ হেফাজতে। পরে ময়মনসিংহ ভালুকা থানায় যোগাযোগ করি এবং আমার যত পরিচিত লোক তাদের রাতেই ফোন করি ফেসবুক, ম্যাসেন্জারে ছবি পাঠাই, সবাইকে মানবিক সহায়তার জন্য এগিয়ে আসতে বলি যাতে বাচ্চাটি তার মা বাবা কে খুজে পায়। গত সোমবার হঠাৎ বিকালের দিকে ফোন আসলো, স্যার আমি রুপমের বাবা সাগর। আমার রুপমকে নিতে আসতেছি। রাতে তারা আসার পরে আবেগঘণ পরিবেশ সৃষ্টি হলো! ওর বাবা-মাকে বললাম আপনারা খবর পেলেন কি করে, তারা আমাকে বলল, স্যার কাল রাতে আপনি ফেজবুকে দিয়েছিলেন, সেই লেখা আমাদের এলাকার একটি ছেলে দেখেছে, সেই আমাদের আপনার ফোন নাম্বার দিয়েছে এবং বলেছে টঙ্গী পূর্ব থানার পুলিশ কাল রাতে তাকে ট্রেন স্টেশন থেকে পেয়েছে।
পরে বাবা-মার কাছে তুলে দেয়া হয় শিশু রূপমকে। এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।