মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
উজিরপুরের কিশোর কেরানীগঞ্জে দূর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত তাড়াশে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে পোড়ানো হলো চায়না জাল। তাড়াশে মালশিন টু গুড়মা কাঁচা রাস্তার বেহাল দশা, ভোগান্তিতে হাজারও মানুষ কালিয়াকৈরে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে বেপরোয়া সাইজুদ্দিন, ত্যাগি নেতা কর্মীরা হতাশ গাজীপুরে বিশ্ব মান দিবস পালন শ্রীবরদীতে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস ১৫ ই অক্টোবর ২০২৪ পালিত বেনজীর সহ সকল ভূমি দস্যুদের কবল থেকে লুন্ঠিত বনভূমি উদ্ধারে ৩ দফার আল্টিমেটাম ব্যবসায়ী কবির হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ বিরামপুরে ট্রাক্টর-ভ্যানের সংঘর্ষে বৃদ্ধের মৃত্যু শ্রীবরদীতে ১৩ মণ্ডপে দূর্গাপুজা উদযাপন নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশ সুপারের পরিদর্শন

শেরপুরে লোকবলের অভাবে বেদখলীয় বনের জমি উদ্ধারে হিমসিম খাচ্ছে বনবিভাগ | সময়ের দেশ

মোঃ বিল্লাল হোসেন, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি :
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৬ আগস্ট, ২০২১
  • ৩১৪ বার পড়া হয়েছে

শেরপুরে লোকবলের অভাবসহ নানা প্রতিবন্ধকতায় বেদখলীয় বনের জমি উদ্ধারে হিমসিম খেতে হচ্ছে বনবিভাগকে। এখানে বনের জমি বেদখলের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। স্থানীয় প্রভাবশালীরা পাহাড়ি বনের জমি দখল করে অবৈধভাবে ঘরবাড়ি নির্মান করে বসবাসের পাশাপাশি শতশত একর জমিতে চাষাবাদ করে আসছে। লোকবলের অভাবসহ নানা প্রতিবন্ধকতায় বনের জমি উদ্ধারে হিমশিম খেতে হচ্ছে বন বিভাগকে।

বনবিভাগ সুত্রে জানা গেছে, শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর বনের জমি রযেছে। শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার সীমান্তের নাকুগাঁও থেকে শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তের ধানুয়া কামালপুর পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে বনভুমি। এসব জমি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তিনটি রেঞ্জ অফিস ও ১১টি ফরেষ্ট অফিস রয়েছে। রেঞ্জ অফিসগুলো হচ্ছে, জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার রাংটিয়া, শ্রীবরদী উপজেলার বালিজুরিও নালিতাবাড়ি উপজেলার মধুটিলা রেঞ্জ। এ তিনটি রেঞ্জ এলাকায় ১১টি ফরেস্ট বিট অফিস রয়েছে। এসব ফরেস্ট বিট অফিসগুলো হচ্ছে, ঝিনাইগাতী উপজেলার রাংটিয়া রেঞ্জের আওতায় রাংটিয়া সদর বিট,গজনী ও তাওয়াকোচা বিট অফিস। শ্রীবরদী উপজেলার বালিজুরি রেঞ্জের আওতায় বালিজুরি সদর বিট, মালাকোচা,কর্ণঝুড়া ও ডুমুরতলা বিট। নালিতাবাড়ী উপজেলার মধুটিলা রেঞ্জের আওতায় সন্ধ্যাকুড়া, সমশ্চুড়া ও বাতকুচি বিট। এসব ফরেস্ট বিট অফিসের আওতায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর বনভূমি রয়েছে। শেরপুর জেলা সদরে রয়েছে সহকারি বন সংরক্ষকের কার্যালয়। শেরপুর জেলায় পুরো বনবিভাগে রয়েছে কর্মকর্তাসহ ৩৪ জন বন কর্মচারি। এ বিশাল এলাকা জুরে বনভুমি রক্ষায় তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।এক সময় বনবিভাগ একটি শক্তিশালী অবস্থানে ছিলো। বর্তমানে লোকবলের অভাবসহ নেই আধুনিক যন্ত্রপাতি। ফলে দিনেদিনে বনবিভাগ কার্যক্ষমতা হারাতে বসেছে। শেরপুরের বনভূমিতে এক সময় শাল গজারীসহ দেশী প্রজাতির বিভিন্ন প্রজাতীর বৃক্ষেভরা গভীর অরন্য ছিলো। কিন্তু দিনেদিনে উজাড় হয়ে গেছে এসব বৃক্ষ। এককালে যেখানে গভীর অরণ্য ছিলো এখন সেখানে বাড়িঘর গড়ে উঠেছে। গভীর অরণ্য এখন জনবস্তি। বনের শতশত একর জমিতে এখন পুরোদমে চাষাবাদ হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, অতিতে স্থানীয় একশ্রেনীর অসাধু বন কর্মকর্তা কর্মচারীদের যোগসাজশে এসব জমি বেদখল হয়ে গেছে। বর্তমানে ও থেমে নেই বনের জমি বেদখলের প্রতিযোগিতা। স্থানীয় প্রভাবশালীরা বনের জমি দখল করে চাষাবাদ করে আসছেন। সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা গেছে, পাহাড়ি টিলায় শতশত একর জমিতে সবজির আবাদ করা হচ্ছে। এসব জমি দখলের বিষয়ে সামাজিক বনায়নের অংশিদারদেন ভুমিকাটি প্রধান বলে জানা গেছে। অংশিদারা সামাজিক বন পাহাড়া দেয়ার অজুহাতে প্রথমে বনের ভিতরে ছোট্র একটি ঘর নির্মাণ করছে। পরে ওই ঘরের চারপাশে সুপারিসহ বিভিন্ন দেশী প্রজাতির বৃক্ষের চারা ও সবজি বাগান গড়ে তুলেন। আর রোপিত চারাগুলো বেরে উঠলে অংশিদাররা কৌশলে বাগানসহ জমিগুলো প্রভাবশালীদের নিকট বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। বন বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, বনের জমি বেদখলের পিছনে সবচেয়ে বড়ো ভুমিকা রয়েছে সামাজিক বনায়নের অংশিদারদের। বনের অংশিদারদের কারনে বনের জমি বেদখল হচ্ছে বেশি। বনবিভাগ সুত্রে জানা গেছে, গত তিন বছরে শতাধিক একর বেদখলীয় জমি উদ্ধার করা হয়েছে। মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন বনের বেদখলীয় জমি উদ্ধার করতে গিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি বলেন মুসলিমদের দখলে থাকা জমি উদ্ধার করতে গেলে বন কর্মচারিদের নামে দেয়া হয় মানহানি মামলা। আবার খ্রিস্ট সম্প্রদায়ের লোকদের দখলীয় জমি উদ্ধার করতে গেলেই শুরু হয় বন কর্মচারিদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল। এদের পিছনে মদদযোগান স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা। এমন অভিযোগ বনকর্মচারিদের। বনবিভাগের হিসাব মতে শেরপুরে ৩ হাজার জবরদখলকারি দেখানো হলেও বেসরকারি হিসেবে তার চেয়ে দিগুণ হবে। শুধু শ্রীবরদী উপজেলার বালিজুরি রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ঘরবাড়ির পাশাপাশি শতশত একর পাহাড়ি জমিতে অবাধে সবজির আবাদ করা হচ্ছে। এ উপজেলায় পুরো বনের জমি এখন সবজি চাষিদের দখলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন সবজি চাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে সবজির প্রতি মৌসুমে বনের জমিতে সবজি আবাদ করতে বন কর্মচারিদের নির্দিষ্ট হারে নজরানা দিতে হয়। টাকার পরিমান কম হলেই কেটে দেয়া হয় সবজির বাগান। তবে বালিজুরি ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন অভিযোগটি সত্য নয়। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি বলেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে বনের বেদখলীয় জমি উদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বনবিভাগ। ইতিমধ্যেই জবরদখলকারিদের তালিকা পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে। আর এঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকার শতশত জবরদখলদার এখন বনকর্মচারিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ফলে বনের জমি বেদখল ঠেকাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে বন বিভাগকে। শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান প্রাঞ্জল এম সাংমা ও নবেশ খকশী বলেন আদিকাল থেকেই আমাদের আদিবাসী সম্প্রদায়ের গারো,হাজং,কোচ,বানাইসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন পাহাড়ে বসবাস করেন। জমিগুলো বনবিভাগের হলেও বাপ দাদার আমল থেকে তারা বসবাস করে আসছেন। তাদের এ জমি থেকে উচ্ছেদ করা হলে তারা যাবে কোথায়? শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক ড,প্রান্তোষ চন্দ্র রায় বলেন আমরা কাউকে উচ্ছেদের পক্ষে নয়। তিনি বলেন একটি পরিবারের বসবাসের জন্য ১০/২০ শতাংশ জমি হলেই যথেষ্ট। কিন্তু তারা ৫/৭ একর জমি দীর্ঘদিন ধরে বেদখল করে রেখেছে। দিনেদিনে টিলা কেটে পরিধি বাড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। কোন বাধা নিষেধ ও মানছেন না তাড়া। তিনি বলেন তারা সরকারি কর্মচারি সরকারের নীতিমালা অনুসরণ করে তাদের কাজ করতে হয়। সরকার বেদখলীয় বনের জমি উদ্ধারের কাজ হাতে নিয়েছে। সরকারের নির্দেশে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সরকার যদি বলে বেদখলীয় জমি উদ্ধারের প্রযোজন নেই। তাহলে আমাদের কোন মাথাব্যথা নেই।

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের নামাজের সময়সুচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:১০ পূর্বাহ্ণ
  • ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ
  • ১৫:৩৬ অপরাহ্ণ
  • ১৭:১৫ অপরাহ্ণ
  • ১৮:৩৪ অপরাহ্ণ
  • ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ
©2020 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102