সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের প্রকল্পটি অন্য জায়গায় সরিয়ে নিতে এবার রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এমপি বরাবরে চিঠি পাঠিয়েছেন নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রাম। গত শুক্রবার নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. অনুপম সেন এবং সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল স্বাক্ষরিত এই চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়- চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত সিআরবি এলাকায় ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের যে হাসপাতাল ও কলেজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, তাতে চট্টগ্রামের আপামর জনতা দ্বিমত পোষণ করছে। কারণ চট্টগ্রাম শহরে এখন সিআরবি ছাড়া উন্মুক্ত স্থান নেই বললেই চলে। সিআরবিতে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ বাঙালির জাতীয় উৎসবের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। বলী খেলা, রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী হয়। সিআরবি সংস্কৃতি চর্চার প্রাণকেন্দ্র।
২০০৮ সালের ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ) সিআরবিকে কালচার অ্যান্ড রেহরিটেজ হিসেবে ঘোষণার বিষয়টি উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, এটি সংরক্ষণের জন্য আটটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। সিআরবিতে বাণিজ্যিক কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না এবং নির্দেশনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব রেলওয়ে ও সিডিএ সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার বলে ড্যাপ এ উল্লেখ আছে। এছাড়া এ প্রকল্পের জন্য ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর ইনভাইটেশন ফর বিড (আইএফবি) নোটিসে যে তফসিল দেওয়া হয়, তাতেও প্রকল্প স্থান হিসেবে সিআরবির কথা উল্লেখ ছিল না বলে রেলমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে জানানো হয়।
চিঠিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রস্তাবিত হাসপাতালটি রেলওয়ের কোনো এক স্থানে নির্মাণ করা হবে বলে আইএফবিতে বলা হয়েছিল। পরে ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজের সাথে রেলওয়ের চুক্তিতে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য সিআরবিকে হাসপাতাল নির্মাণের স্থান হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করায় চট্টগ্রামবাসী মর্মাহত ও সংক্ষুব্ধ।
প্রস্তাবিত প্রকল্প স্থানটিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম জিএস বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবদুর রবসহ ১১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সমাধি রয়েছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, চট্টগ্রামবাসী মনে করে, এই সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের প্রক্রিয়ায় কালচার অ্যান্ড হেরিটেজ চিহ্নিত তথ্যটি বাংলাদেশ রেলওয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। বিষয়টিতে চট্টগ্রামবাসী দ্বিমতসহ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে প্রস্তাবিত হাসপাতালটি সিআরবির পরিবর্তে চট্টগ্রামে রেলের অন্য কোনো জায়গায় স্থানান্তরে পদক্ষেপ নিতে রেলমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।