গাজীপুরের টঙ্গীর এক গার্মেন্টস কারখানায় নামাজ, টুপি ও পাঞ্জাবি পরা যাবে না বলে নোটিশ দেয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি সমালোচিত হলে বুধবার কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানটি দুঃখ প্রকাশ করে অনিচ্ছাকৃত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার জন্য ক্ষমা চায়।
জানা গেছে, গত ৩রা জুলাই মঙ্গলবার সাতাইশ দাড়াইল এলাকার এসঅ্যান্ডপি বাংলা লিমিটেড নামের একটি কারখানার নোটিশে বলা হয়, ‘সকল শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, কারখানার ভেতরে নামাজ পড়া যাবে না। সেই সঙ্গে কারখানায় পাঞ্জাবি ও টুপি পড়া নিষেধ।থ
এ নোটিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে এবং স্থানীয় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
অতঃপর ঊর্ধ্বতন প্রশাসন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হলে তাৎক্ষণিক নির্দেশনায় টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ আলম কারখানা কতৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ নিজেদের ভুল স্বীকার করে ৪ঠা জুলাই বুধবার দ্রুত পুনঃনোটিশ দিয়ে বিষয়টিকে অনিচ্ছাকৃত ভুল অবহিত করেন।
এতে বলা হয়, ‘সকল শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, কারখানার অভ্যন্তরে নামাজ পড়া, পাঞ্জাবি ও টুপি পরা থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা প্রদান অনিচ্ছাকৃত ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। যার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।
কারখানার কর্মকর্তা, কর্মচারীরা আগের মতোই যার যার ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী পোশাক পরিধানসহ স্বাধীনভাবে ইবাদত করতে পারবেন।থ
শ্রমিকদের আন্দোলন উত্তেজনা দমাতে অনাকাঙ্খিত কোন ঘটনা এড়াতে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে, রাতেই অতিরিক্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
অবশেষে, ৫ই জুলাই বৃহস্পতিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে গাজীপুর মেট্রোপলিটন উপ পুলিশ কমিশনার অপরাধ দক্ষিণ ইলতুৎ মিশ, গাজীপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ- ২ পুলিশ সুপার মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের সিনিয়র এএসপি এস আলম, সহকারী পুলিশ কমিশনার আহসানুল হক, মেট্রোপলিটন পুলিশের এসি পীযূষ কুমার দেব, টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ আলম, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার অফিসারবৃন্দ, মালিক পক্ষ এবং কারখানা কর্মরত শ্রমিকদের সাথে কথা বলে ধর্মপ্রাণ মুসলিম ভাই-বোনদের ধর্মীয় কার্যসম্পাদনের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করেন।
৯০.৪% মুসলমান দেশে এ ধরনের নোটিশ কিভাবে দিয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসি।
এসঅ্যান্ডপি বাংলা লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. মাহবুব আলম বলেন, কোরিয়ান নাগরিকদের মালিকানাধীন কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে গার্মেন্টস পণ্য উৎপাদন করে যাচ্ছে। সম্প্রতি মালিকপক্ষ কারখানায় নামাজ, টুপি ও পাঞ্জাবি না পরতে একটি নির্দেশনা দেয়। এটা মূলত কোরিয়ান মালিকপক্ষের ভাষাগত ভুল ছিল। পরে আরেকটি চিঠির মাধ্যমে মালিকপক্ষ আদেশটি প্রত্যাহার করে নেয়।