শেরপুরে করোনার প্রকোপ বেড়েছে। গত জুন মাস থেকে জেলায় করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে। জুলাই মাসে এ সংখ্যা সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। কেবল জুলাই মাসেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ১৩ জন। তন্মধ্যে ৪১ জনের মৃত্যুঘটেছে। শনাক্ত বিবেচনায় আক্রান্তের হার ৩৩ শতাংশ। যা বিগত ১৬ মাসের মৃত্যুও আক্রান্তের সংখ্যা এই একমাসেই দেড়গুন বেড়েছে। আর আগস্ট মাস শুরুই হয়েছে ৩ জনের মৃত্যুও নতুন ৬১ জন আক্রান্তের মাধ্যমে। জেলায় প্রথম করোনা ভাইরাসে (কভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৫ এপ্রিল। সেইথেকে এ বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হজার ৫৬৬ জন। আর
মৃত্যুঘটেছে ৭১ জনের। অথচ এপ্রিল-২০২০ থেকে মে-২০২১ পর্যন্ত ১৪ মাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয় ৭৬৬ জন
এবং মৃত্যুঘটে ১৫ জনের। কিন্তুগত জুন থেকে প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়তে থাকে করোনা রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা। এ
মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে বিগত ১৪ মাসের সমান হয়ে যায়। অর্থা জুনে নতুন ৭৮৮ জন আক্রান্ত শনাক্ত সহ মোট আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫৫৪ এবং নতুন ১৫ জনের মৃত্যুসহ জেলায় মোট মৃত্যুঘটে ৩০ জনের। জুলাইয়ে এই সংখ্যা চরমে পৌঁছে। আক্রান্ত হয় ২ হাজার ১৩ জন এবং মৃত্যুঘটে ৪১ জনের। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিদিনের স্বাস্থ্য বুলেটিন পর্যালোচনায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল সহ সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকি সক ও লোকবল সংকটের কারণে আন্তরিকতা থাকা স্বস্ত্বেও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকি সা সেবায় হিমশিম খেতে থাকে
জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ। পাশাপাশি অক্সিজেন, শয্যা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর চাহিদাও বাড়তে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসেন নাগরিক সমাজ ও বিভিন্ন সংগঠন। করোনারোগীদের চিকি সা সহায়তায় শেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ব্যবহারের জন্য নাগরিক প্ল্যাটফরম জনউদ্যোগ শেরপুর কমিটির পক্ষ থেকে ২ আগস্ট সোমবার কিছুহ্যান্ডসেনিটাইজার ও গ্লাভস সিভিল সার্জন ডা. এ.কে.এম আনওয়ারুর রউফের হাতে
তুলে দেওয়া হয়। এসময় শেরপুর প্রেসক্লাব সভাপতি মো. শরিফুর রহমান, জনউদ্যোগ আহ্বায়ক শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, সদস্যসচিব হাকিম বাবুল, হাসপাতালের আরএমও ডা. মোবারক হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ঢাকাস্থ শেরপুর জেলা সমিতির পক্ষ থেকে এ হাসপাতালের জন্য ২০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করা হয়। আইইবি-ম্যাক্স গ্রুপ ২০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার দেওয়া হয়। বেসরকারি জামান মডার্ণ হাসপাতালের স্বত্ত্বাধিকারী ডা. মো. সুরুজ্জামান ১০ টি বেড (শয্যা) এবং জিনোম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
কর্তৃপক্ষ ১০ বেড (শয্যা) অনুদান দেন।
সিভিল সার্জন ডা. এ.কে.এম. আনওয়ারুর রউফ বলেন, করোনার প্রকোপ বাড়ছেই। আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে করোনা সংক্রমণ রোধ ও রোগীদের চিকি সায় সবরকমের পদক্ষেপ নিয়েছি। সরকারের পাশাপাশি নাগরিক সমাজ এবং বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন করোনা রোগীদের চিকি সা সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন, এটা খুবই
ভালো দিক। তিনি করোনা সংক্রমন রোধে সকলকে মাস্ক পড়া, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং বিনা
প্রয়োজনে এসময়বাড়ীর বাইরে বের না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।