সারাদেশে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে পালিত হলো ঈদুল আজহা। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের মৃত্যুর রেকর্ডের সপ্তাহে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদ-উল-আজহা ৷ করোনা পরিস্থিতির কারণে গতবারের মতো এবছরও জাতীয় ঈদগাহে জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি না।
বুধবার সকাল ৭টায় ঈদ-উল-আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে। এতে ইমামতি করেন সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান। এরপর সকাল ৮টা, সকাল ৯টা, ১০টা এবং বেলা পৌনে ১১টায় আরও চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুল মোকাররমের মতো ঢাকার অন্যান্য মসজিদেও এক বা একাধিক ঈদ জামাত আয়োজন করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বিবেচনায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জারি করা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সবাইকে অনুরোধ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশু কোরবানির জন্য নগরবাসীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে কোরবানির পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণের বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে উভয় সিটি করপোরেশন।
বিনোদন কেন্দ্র সব বন্ধ থাকলেও বরাবরের মতো ঈদে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা নিয়ে থাকছে টেলিভিশন স্টেশনগুলো। হাসপাতাল, কারাগার, শিশু সদনে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও থাকছে। ত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হয়ে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঈদ উপলক্ষে দেয়া বাণীতে প্রেসিডেন্ট বলেন, এ বছর এমন একটা সময়ে ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হচ্ছে যখন বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব করোনাভাইরাসের সংক্রমণে চরমভাবে বিপর্যস্ত।
করোনার কারণে দেশের জনগণের জীবন ও জীবিকা আজ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী। জীবন বাঁচানো প্রথম অগ্রাধিকার হলেও জীবন বাঁচিয়ে রাখতে জীবিকার গুরুত্বও অনস্বীকার্য। কঠিন এ সময়ে আমি দেশের আপামর জনগণের প্রতি কুরবানির মর্মার্থ অনুধাবন করে সংযম ও ত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হয়ে মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।
করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে আক্রান্ত ও মৃত্যু হু হু করে বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কোভিড সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি কমিটির পরামর্শে ১ জুলাই থেকে লকডাউন জারি করেছিল সরকার। দুই সপ্তাহের বিধিনিষেধের পর ঈদ উদযাপনে ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত সব বিধি-নিষেধ শিথিল করা হয়। যদিও তাতে স্পষ্ট আপত্তি ছিল কোভিড কারিগরি কমিটির। এতে পরিস্থিতি জটিল রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা জানায় তারা।