গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন টঙ্গী অঞ্চলের ৫৪ নং ওয়ার্ড এলাকার বেশ কয়েকটি কল-কারখানার অপরিশোধিত তরল ও ভারী রাসায়নিক মিশ্রিত বর্জ্য আর গৃহস্থালীর আবর্জনায় স্থানীয় সর্ব বৃহৎ ড্রেন ও সুয়ারেজ ব্যবস্থার বেহাল দশা। অল্প বৃষ্টিতে স্থানীয় সড়কগুলোতে পানি জমে সৃষ্টি হয় চরম জন ভোগান্তি। রাস্তায় ড্রেনের জল উঠে কর্দমাক্ত হয়ে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়ে রাস্তা আর দূর্গন্ধযুক্ত হয়ে পড়ে পুরো এলাকা।
টঙ্গী পৌরসভা থাকাকালীন মেয়র এড. আজমত উল্লা খান বিভিন্ন বিদেশী প্রকল্পের আর্থিক সহযোগীতায় তৎকালীন ৩নং ওয়ার্ডের উত্তরে খঁাপাড়া এলাকায় প্রায় ৬ শত মিটার দৈঘর্য, দুই মিটার প্রশস্থ ও ৫ ফুট গভীরতা বেষ্টিত এই এলাকার সর্ব বৃহৎ ড্রেনখানা নির্মান করা হয়। সাবেক ৩ নং ও বর্তমান ৫৪ নং ওয়ার্ড এলাকায় এই ড্রেনটির আশেপাশে প্রায় শহস্রাধিক কাঁচা-পাকা বাড়িসহ আরো প্রায় অর্ধ শতাধিক ভবন রয়েছে।
এছাড়াও রয়েছে প্রায় ২০/২৫ টি শিল্প কারখানা। শিল্পাঞ্চল বেষ্টিত এলাকা হওয়ার দরুন শিল্প শ্রমিক ও স্থানীয় মিলিয়ে প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার লোকজনের বসবাস। এইসব পোশাক কারখানায় কর্মরত হাজার হাজার শিল্প শ্রমিকদের চলাচলের জন্য একটি রাস্তা আর ওই প্রশস্ত ড্রেনটি ছাড়া বিকল্প কোন উপায়ান্তর নেই। অগত্যা বাধ্য হয়েই চরম ভোগান্তিকে নিয়তি ভেবে কর্মস্থলে যাতায়াতের জন্য এই ড্রেন ও সড়কটিকে একমাত্র অবলম্বন হিসেবে ব্যবহার করতে হয়।
অপরদিকে, জন-চলাচলের ভোগান্তি লাঘব করার জন্য স্থানীয় যুবলীগ নেতা রবিউল ইসলাম দুলু তার বন্ধু মহলকে সাথে নিয়ে এলাকার গন্যমান্যদের সাথে পরামর্শ করেন। এক পর্যায়ে তারা এই বৃহৎ শ্রমজীবিদের কষ্ট কমিয়ে আনার জন্য ওই যুবলীগ কর্মী তার বন্ধুদের নিয়ে স্থানীয় ৫৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ নাসির উদ্দিন মোল্লা ও গাজীপুর মহানগর যুবলীগ নেতা মোঃ বিল্লাল হোসেন মোল্লার সার্বিক সহযোগিতায় বিগত কয়েকদিন যাবত ড্রেনের ময়লা নিষ্কাশনের কাজ প্রক্রিয়াধীন অব্যাহত রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে অদ্য পর্যন্ত রবিউল ইসলাম দুলু তার বন্ধু মহলের সাথে বেশ কয়েকজন দিন-মজুর নিয়ে প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ভোর পর্যন্ত লাগাতার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যতদিন এই ড্রেনটির ময়লার স্তুপ পরিস্কার না হয় ততদিন তারা তাদের এই কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। এলাকার বাড়িওলাদের সহযোগিতার মধ্যে রয়েছেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান মাষ্টার, মোঃ হারুন মিয়া, মোঃ হাসেম আলী, মোঃ খোকা মিয়া, মোঃ জামাল মিয়া ও মোঃ মনির হোসেন প্রমুখ। এই কাজে ওই যুবলীগ নেতার সাথে সেচ্ছা শ্রমের সহযোগীতায় করছেন- মোঃ আক্তার হোসেন, মোঃ খোকন মিয়া, মোঃ বাবুল মিয়া ও মোঃ এখলাস হোসেন।
এলাকাবাসীরা জানান, এই ড্রেনটিতে সারাদিন ভিয়েলাটেক্স, মাসকো-২, মন্ডল ফ্যাশন, এস আই গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন কারখানার রঙ্গীন পানি অনবরত ছাড়তে থাকে এবং সব সময় ড্রেন থেকে ধোঁয়া উঠতে থাকে আর প্রতিনিয়ত দূর্গন্ধ ছড়ায় এলাকায়। এই দূগন্ধের কারনে বাড়ীর জানালা- দরজা সব সময়ই বন্ধ করে রাখতে হয় এবং এলাকার বিষাক্ত দুগন্ধে অনেকে নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
৫৪ নং ওয়ার্ড কার্যালয়ে গিয়ে কাউন্সিলর মোঃ নাসির উদ্দিন মোল্লার সাথে কথা বললে তিনি ড্রেন পরিস্কারের জন্য লোকজন পাঠান। কিন্তু ড্রেনটির স্লাব গুলো বেশ বড় ও অত্যাধিক ভারী হওয়ার কারনে ওই স্লাব তুলে ড্রেনটি পরিস্কার করার জন্য ওই সব বয়জৈষ্ঠ মানুষগুলো একে বারেই অক্ষম। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কাউন্সিললের নির্দেশে যতটুকু সম্ভব তারা ড্রেন পরিষ্কার করার চেষ্টা করতো। কিন্তু ময়লা ভর্তি ড্রেনের পুরো পরিষ্কার করার জন্য এলাকার যুবলীগ নেতা রবিউল ইসলাম দুলুর উদ্যোগে বেশ কয়েকদিন যাবৎ গভীর রাত পর্যন্ত ড্রেনের পয়নিষ্কাশনের কাজ করে যাচ্ছে ও যুবলীগ নেতা মোঃ বিল্লাল হোসেন মোল্লা নিজে এসে পরিদর্শন করে লেবার নিয়ে কাজ করার জন্য ব্যক্তিগত ভাবে আর্থিক সহযোগীতা প্রদান করেন।
এলাকার মানুষের দাবি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এড. জাহাঙ্গীর আলম এ বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে দ্রু ঋদ্ধত কার্যকরী পদক্ষেপ নিবেন।