কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়া এলাকায় নারীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় লাঞ্চিত হয়েছে এক শিক্ষানবিশ আইনজীবি। জাহেদুল ইসলাম নামে ওই শিক্ষানবিশ আইনজীবি চিহ্নিত কিশোর গ্যাংয়ের হাতে লাঞ্চিত হন। এই ঘটনায় এক স্কুলছাত্রসহ দুইজনকে মারধর করেছে গ্যাংয়ের সদস্যরা। এমনকি ঘরবাড়িও ভাংচুর করেছে একই এলাকার মনিরের ছেলে কিশোর গ্যাং লিডার সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে একদল কিশোর গ্যাং।
বুধবার (৯ জুন) রাত ১১ টার দিকে শহরের ১নং ওয়ার্ড সমিতি পাড়াস্থ রাসেল টেইলার্সের সামনে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে সদর থানা পুলিশ। ঘটনার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সমিতি পাড়া রাস্তায় চলাচলকারি দুই নারীকে উত্ত্যক্ত করে সালাউদ্দিনসহ দুই যুবক। ওই সময় রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন শিক্ষানবিশ আইনজীবি জাহেদ। উত্ত্যক্তের বিষয়টি তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন। প্রতিবাদ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে সালাউদ্দিনসহ তার গ্যাংয়ের হাতে লাঞ্চিত হন জাহেদ। এসময় জাহেদের সাথে থাকা এসএসসি পরীক্ষার্থী আবু সাঈদ ও মনজুর আলম বিষয়টি প্রতিবাদ করলে তাদের মারধর করে এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। মারধরে আহত আবু সাঈদ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা নেন। সাঈদ একই এলাকার বেলাল হোসেনের ছেলে এবং মনজুর মৃত জাফর আলমের ছেলে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নারীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদে শিক্ষানবিশ আইনজীবি লাঞ্চিত হওয়ার পরও হামলার শিকার হয়েছে মনজুর ও আবু সাঈদ। কিশোর গ্যাং লিডার একই এলাকার মনিরের ছেলে সালাউদ্দিন ও আমির খানের নেতৃত্ব এই ঘটনা ঘটে। আমির খান এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী হিসেবে বেশ পরিচিত। তাদের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য হাসেমের ছেলে তরিকুল ইসলাম ওরফে বাবু, মনু ওরফে মাইকিং মনু, বাবু, নজরুল, মনু ওরফে বাট্টা মনু, মন্নান, সাগর, শাহেদ ও বন মামলার আসামী গফুর। এরিমধ্যে তরিকুল ইসলামের পিতা হাসেস ওরফে মই¹া হাসেমের বিরুদ্ধে রয়েছে মাদকসহ বিভিন্ন মামলা এবং গফুরের বিরুদ্ধে রয়েছে বন মামলা। গফুর এই ঘটনার ইন্ধনদাতা হিসেবে জানা গেছে। ঘটনাস্থলের এক দোকানদার জানান, সালাউদ্দিনসহ তার সাথে থাকা সবাই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। এরা প্রতিনিয়ত স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীসহ নারী পথচারীদের বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছে দীর্ঘদিন।
ঋইতিপূর্বে এই গ্যাংয়ের হাতে অনেকেই উত্ত্যক্তের শিকার হলেও এর প্রতিবাদ বা সঠিক বিচার না হওয়ায় এই কিশোর গ্যাং দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এলাকার কিছু বড়ভাই নামদারী চিহ্নিত অপরাধীর আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এই কিশোর গ্যাংটি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ অনেকের। এলাকার সবাই এই গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দাবী জানাচ্ছে। শিক্ষানবিশ আইনজীবি জাহেদুল ইসলাম বলেন, এই কিশোর গ্যাংটি আমাকে লাঞ্চিত করার পর আমার সাথে থাকা দুই ছোটভাইকে মারধর করেছে। এরমধ্যে একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী। কিশোর গ্যাংটি শুধু লাঞ্চিত ও মারধর করে ক্লান্ত হয়নি; তারা মনজুরের বোনের জামাই মো. শুক্কুরের বাড়িঘরও ভাংচুর করেছে। এছাড়া নিয়মিত হুমকিও দিয়ে যাচ্ছে। এবিষয়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
এবিষয়ে কক্সবাজার পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আক্তার কামাল সময়ের দেশকে বলেন, শুনেছি নারীকে উত্ত্যক্তের ঘটনায় সমিতি পাড়া এলাকায় ঝামেলা হয়েছে। রাতে পুলিশও এসেছিল। এই ঘটনায় একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবিও লাঞ্চিত হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। এই ঘটনায় এলাকায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াও হয়েছে।