
ক্ষোভ থেকে কিশোর সোহানকে (১৪) হত্যার পর লাশ ময়লার স্তুপে ফেলে রাখে তার দুই বন্ধু। দীর্ঘ তদন্তের পর গাজীপুরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কিশোর সোহান হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে।পরিকল্পনা অনুযায়ী সোহানকে ডেকে ঘটনাস্থলের পাশের জঙ্গলে নিয়ে প্রথমে সাগর বাঁশ দিয়ে মাথায় আঘাত করে। আজিজুল চাকু দিয়ে বুকে আঘাত করে। পরে সোহানকে নিয়ে ওই ময়লার স্তুপে চাপা দিয়ে চলে যায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গাজীপুরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এসআই সুমন মিয়া জানান, ২০২০ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় কিশোর সোহান (১৪)। তার মা নাজমা বেগম ৬ আগস্ট সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে ৩১ আগস্ট গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী খালের ব্রিজ সংলগ্ন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পশ্চিম পাশে ময়লার স্তুপ কঙ্কাল দেখতে পায় স্থানীয়রা। কঙ্কালের পাশে পড়ে থাকা জামা, প্যান্ট, স্যান্ডেল দেখে সেটি সোহান বলে শনাক্ত করেন নাজমা বেগম। ওই দিনই তিনি অজ্ঞাতদের আসামি করে শ্রীপুর থানায় মামলা করেন।
পরে থানা পুলিশ প্রায় দুই মাস তদন্ত করে মো. আজিজুল, মো. সাগর, হৃদয় ও সবুজ নামে চারজনকে গ্রেফতার করে। পরে মামলাটি গাজীপুর পিবিআই তদন্ত শুরু করে। লাশের ডিএনএ পরীক্ষার পর সেটি কিশোর সোহান বলে নিশ্চিত হয় পিবিআই। তদন্তকালে আসামি সাগরকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার এবং আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপর আসামির নামও বলে সে। সাগরের দেয়া তথ্যে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি গত ২৩ মে উদ্ধার করা হয়।
জবানবন্দিতে সাগর জানায়, নিহত সোহান এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিরা পরস্পর বন্ধু। তারা একসঙ্গে চলাফেরা করত। ঘটনার কিছু দিন আগে সাগর তার বন্ধু সোহানকে মারপিট করে। সোহান তার বাবাকে বিষয়টি জানালে আসামি সাগরকে ময়মনসিংহ মহাসড়কের আইল্যান্ডের গাছের সঙ্গে বেঁধে জুতা ও লাঠি দিয়ে মারপিট করে সোহানের বাবা। এতে তার ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এছাড়া ঘটনায় জড়িত অপর আসামি আজিজুলকে সোহানের বাবা ২০০পিচ ইয়াবাসহ পুলিশকে ধরিয়ে দেয়। আজিজুল তিন মাস জেল খাটে। এ নিয়ে তার মধ্যেও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। পরে তারা সোহানকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সোহানকে ডেকে ঘটনাস্থলের পাশের জঙ্গলে নিয়ে প্রথমে সাগর বাঁশ দিয়ে মাথায় আঘাত করে। আজিজুল চাকু দিয়ে বুকে আঘাত করে। পরে সোহানকে নিয়ে ওই ময়লার স্তুপে চাপা দিয়ে চলে যায়।